পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চয়নিকা
৮৭

বিকারের মরীচিকা জালে। অতল গম্ভীর তব
অন্তর হইতে কহ সান্ত্বনার বাক্য অভিনব
আষাঢ়ের জলদমন্ত্রের মতো; স্নিগ্ধ মাতৃপাণি
চিন্তাতপ্ত ভালে তার তালে তালে বারংবার হানি’,
সর্বাঙ্গে সহস্রবার দিয়া তারে স্নেহময় চুমা,
বলো তারে “শান্তি। শান্তি।” বলো তারে
“ঘুমা, ঘুমা, ঘুমা”

রামপুর বোয়ালিয়া
১৭ চৈত্র, ১২৯৯
—সোনার তরী

মানস-সুন্দরী

আজ কোনো কাজ নয়,—সব ফেলে দিয়ে
ছন্দোবন্ধগ্রন্থগীত—এসো তুমি প্রিয়ে,
আজন্ম-সাধন-ধন সুন্দরী আমার,
কবিতা, কল্পনা-লতা। শুধু একবার
কাছে বসো। আজ শুধু কূজন গুঞ্জন,
তোমাতে আমাতে শুধু নীরবে ভুঞ্জন
এই সন্ধ্যা-কিরণের সুবর্ণ মদিরা,—
যতক্ষণ অন্তরের শিরা উপশিরা
লাবণ্য প্রবাহভরে ভরি’ নাহি উঠে,
যতক্ষণে মহানন্দে নাহি যায় টুটে
চেতনাবেদনাবন্ধ, ভুলে যাই সব
কী আশা মেটেনি প্রাণে, কী সংগীতরব
গিয়েছে নীরব হয়ে, কী আনন্দসুধা
অধরের প্রান্তে এসে অন্তরের ক্ষুধা