পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিয়ের আগে তোরা কিছুদিন এখানে এসে থাকবি না ত কি। যখন তোদের সুবিধা হয় আসিস। আমার পক্ষে এখন কোথাও যাওয়া অসন্তব— নড়চড়া করতে গেলে তখনি বুঝতে পারি— হৃদযন্ত্রটা পাঁজরের ভিতরে একটা বোঝা হয়ে আছে। সমত্ত দিন কেদারায় বসে কাটাই। কি ভাগ্যি এবারে গরম এখনো পড়ে নি। মাঝে মাঝে ঝড়বৃষ্টি হয়। বাইরের দিকে চেয়ে চেয়ে আমার বেলা চলে যায়। বেশ ভালোই লাগে। এই অসুখের ভিতর দিয়ে খুব বড় একটা মুক্তির ভাব সমস্ত ক্ষণ আমার মনের মধ্যে লেগেই আছে। দিনের আলো নিবে গেলে রাত্রের আকাশে সমস্ত জ্যোতিষ্কলোক যেমন সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে— প্রাণের আলো স্নান হয়ে এলে অমৃতলোকের আভাস তেমনি করেই মনের দৃষ্টির সামনে ফুটে ওঠে। যখন ছোট ছিলুম তখন বিশ্বপ্রকৃতির বুকের মধ্যে আমার মুক্তির জায়গা ছিল— অনেককাল পরে অনেক পরিমাণে আমার সেইদিন যেন ফিরে এসেচে। সেইজন্যে আমার দূৰ্ব্বলতার বোঝা বুকে পিঠে বহন করেও মনে হচ্চে আমি ছুটি পেয়েছি। ভানুদাদা বীরেনের চিঠি পড়ে খুবই খুসি হয়েছি। বাঙালীর ঘরে এ রকম ছেলে প্রায় দেখা যায় না। ওর ভালোবাসা তোর পক্ষে কেবল সৌভাগ্য নয় সম্মান। আমার কামনা, তুই যেন কায়মনোবাক্যে এর যোগ্য হতে পারিস। ‘GIVL