বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
চীন ভ্রমণ

 যাত্রীর ভিড় একটু কমিয়া গেলে জাহাজ হইতে নামিলাম। যে নৌকার সাহায্যে তীরে আসিলাম, সে নৌকায় সপরিবারে একটি চীনে গৃহস্থ বাস করে। পা’ল তোলাতে যাই নৌকাখানি বায়ুভরে হেলিল, অমনি আমাদের ভয় হইতেছে বুঝিয়া নৌ-সীমন্তিনী বলিয়া উঠিলেন - “No fear! No fear!” অর্থাৎ-“ভয় নাই,ভয় নাই!”

 তীরে নেমে দেখি ক্যাণ্টন হইতে একখানি জাহাজ তখনই আসিয়া পৌঁছিয়াছে। তার যাত্রীদের নিকট আফিম আছে কিনা তদন্ত করিতে করিতে অনেকজন শিখ পাহারাওয়ালা চীনেদের উপর নানারূপ তম্বিতাগাদ করিতেছে। আমরা হিন্দিতে পথ জিজ্ঞাসা করাতে, তাহারা দুইখানি রিকস ডাকিয়া দিল। রিকসওয়ালারা আমাদের দুই জনকে- প্রত্যেকের ৫ সেণ্ট ভাড়ায় পোষ্টাফিসে পৌছিয়া দিল। হংকংএ নামিয়াই প্রথম দৃশ্য দেখিলাম,—কোন চীনে মৃতব্যক্তির অন্ত্যোষ্টির জন্য তাঁহার মৃত দেহ শ্মশানে লইয়া যাইতেছে।

 ধনী লোক মারা গিয়েছেন, তাঁর শবদেহ বাক্সে বন্ধ করিয়া লইয়া যাইতেছে, আর তার পিছনে পিছনে রিকসর সারি চলিয়াছে। অনেক গুলিতেই উচ্চৈঃস্বরে রোরুদ্যমানা চীনে স্ত্রীলোক মুখ ঢাকিয়া বাসিয়া আছেন। তাঁহাদের সকরুণ আর্ত্তনাদ শুনিয়া মনটা কেমন হ’য়ে গেল। তারা মৃত আত্মীয়ের স্নেহের কথা ও তাঁহার সহিত চির-বিচ্ছেদের কথা ভাবতে ভাবতে অধীর হ'চ্চেন। আমারও নিজের বাড়ির কথা মনে হ'তে লাগল। জাহাজের উপর অনেক দিন বাদে চিঠি পত্র পাওয়া যায়। কে কেমন আছে ভাবিয়া মনটা যেন বাড়ী আসবার জন্য ব্যস্ত হ’য়ে উঠল।

 ডাকঘরে গিয়ে বাড়ীতে চিঠি লিখিব ব’লে টিকিট কিনিবার জন্য একটি ডলার দিলাম। চীনে পোষ্টমাষ্টার বলিল, “এ ডলার এখানে চলবে না।” টাকা সিঙ্গাপুরে চলে না। আবার সিঙ্গাপুরের ডলার এখানে