বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
চীন ভ্রমণ।

মাসই এখানে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব। সে ম্যালেরিয়া হইতে কাহারও,—বিশেষ ইউরোপবাসীদের রক্ষা পাওয়া দায়। তা'ছাড়া আসাম অঞ্চলে যে “কালা-আজর” নামক এক প্রকার জ্বর হয়, সে জ্বরও এখানে খুব দেখিতে পাওয়া যায়। এই সকল কারণে স্থানটীর স্বাস্থ্যোন্নতি ও ব্যবসার উন্নতি হইতেছে না। আমরা রেঙ্গুন হইতে আনীত বিস্তর চাল ও কতকগুলি বিলাতী কাপড়ের গাঁট নামাইয়া দিলাম মাত্র, সেখান হইতে কিছুই লইলাম না।

 আজকাল মশা মারিয়া এখানকার ম্যালেরিয়া কমাইবার প্রস্তাবও হইতেছে। এ বিষয়ে কৃতকার্য্য হইলে শীঘ্রই স্থানটির উন্নতি হইবে। সেখানে যে ৫।৬ ঘণ্টা ছিলাম, তার মধ্যে আমি ভয়ে ভয়েই স্থানটী দেখিয়া বাড়াইয়াছি। ভয়ের কারণ, পাছে এই অল্প সময়ের মধ্যেই ম্যালেরিয়া ধরে! দেখিবারও তথায় বেশী কিছুই নাই। রেঙ্গুনের মত নিচু সমতল ভূমি বলিয়া এখানকার রাস্তাগুলিও চাওড়া ও সোজা। বাড়ীগুলি কাঠের। আমাদের দেশে ম্যালেরিয়ার একটি প্রধান আড্ডা বর্দ্ধমান জেলার মত এখানেও এটেল মাটি দেখিলাম। জমি নরম ও ভিজা বলিয়া হালকা করিয়া বাড়ী তৈয়ার করিতে হয় এবং বায়ু যাতায়াতের জন্য তাহার তলা খুলিয়া রাখিতে হয়। এখানেও প্রায় সকল বাসীন্দাই চীনেম্যান। তারাই দোকান করে। চুল ধুইবার ও বিনাইবার দোকানের পাশেই চণ্ডুর দোকান। তার পাশেই জুয়া খেলিবার আড্ডা। কালো মালয়বাসীরা মাটি কাটিয়া কুলির কাজ করিয়া বেড়াইতেছে। এখানকার জলবায়ুতে চির অভ্যস্ত বলিয়া,তাহারা ম্যালেরিয়ায় তত ভোগে না।

 এখান হইতে জাহাজ ছাড়িয়া তার পর পরদিন প্রাতে সিঙ্গাপুর পৌছিলাম। শুধু মালয়-উপদ্বীপ নয়, সমগ্র এসিয়ার মধ্যে সিঙ্গাপুৱাই সর্ব্বাপেক্ষা প্রধান বন্দর। বন্দরে ঢুকিবার সময় দূর হইতেই তাহার