পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
২৭

 মু। আজ্ঞে হাঁ।

 এই বলিয়া দোকানে একটা লোককে বসাইয়া মুদী আমার আগে আগে চলিল। আমি তাহার অনুসরণ করিলাম। কিছুদূর যাইবার পর মুদী একখানি ক্ষুদ্র একতলা বাড়ীতে প্রবেশ করিল, এবং অতি যত্নের সহিত আমাকে ভিতরে লইয়া গেল। সন্ন্যাসীর বেশ দেখিয়া পথে কেহ কোন কথা কহিল না।

 বাড়ীর ভিতর গিয়া দেখিলাম, একজন বৃদ্ধ একখানি ঘরের দরজায় বসিয়া তামাক সেবন করিতেছে। একতলা হইলেও বাড়ীখানি বেশ উঁচু। বাড়ীর ভিতরে তিনখানি ঘর, বাহিরেও তিনখানি ঘর। ভিতরে একখানি রান্নাঘর, অপর দুইখানি শোবার ঘর। শুনিলাম, সে দুইখানি ঘরে জহর ও তাহার ভাই পান্না থাকে। বৃদ্ধকে বাহিরে থাকিতে হয়। তাহার অনেক দিন পূর্ব্বে স্ত্রী-বিয়োগ হইয়াছে। দুইটী পুত্রবধূ তাহার সংসারের আকল কাজই করিয়া থাকে।

 বৃদ্ধ আমাকে দেখিয়া আশ্চর্য্যান্বিত হইল। বলিল, “কি ঠাকুর, একেবারে অন্দরে যে? ব্যাপার কি?”

 আমি কোন উত্তর করিবার আগেই মুদী বৃদ্ধকে বাধা দিয়া বলিল, “ও কি করেন জ্যেঠা মশায়! আমি এঁকে ডাকিয়া আনিয়াছি। ইহাঁর নিকট পাগলের খুব ভাল ওষুধ আছে, জহরকে দেখাইতে আনিয়াছি।”

 মুদীর কথা শুনিয়া বৃদ্ধের মুখ মলিন হইয়া গেল। সে ভাবিল, আমি বুঝি সত্য সত্যই দেবতা—তাহার পুত্ত্রকে আরোগ্য করিবার জনা তাহার বাড়ীতে আসিয়াছি। সে আগে অতি বিনীতভাবে ভূমিষ্ট হইয়া আমায় প্রণাম করিল, পরে বলিল, “ঠাকুর, আমি না