থানায় আসিলাম। পরে পুলিসের সুপারিন্টেণ্ডেণ্টের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া আমার উদ্দেশ্য জ্ঞাপন করিলাম। সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট সাহেব আমাকে বিলক্ষণ চেনেন, তিনি আমার অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া হাসিলেন এবং তখনই জহরলালের মুক্তির আদেশ দিলেন। জহরলাল মুক্ত হইল।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
পরদিন প্রাতে জহরলালের বাড়ীতে যাইলাম। সেবার সন্ন্যাসীবেশেই গিয়াছিলাম। বৃদ্ধ আমায় দেখিয়া অতান্ত রোদন করিল; বলিল, “ঠাকুর, ভাল হওয়া দূরের কথা, জহরের পাগলামি আরও বাড়িয়াছে। পরশ্ব রাত্রে হাত-পায়ের বন্ধন ছিঁড়িয়া সে যে কোথায় গিয়াছিল, তাহার সন্ধান পাই নাই। কাল সকালে শুনিলাম, সে নাকি জোড়াসাঁকোর কোন ধনাঢ্য লোকের বাড়ীতে গিয়া কি উৎপাত করিয়াছিল। কত টাকার জিনিষ যে সে নষ্ট করিয়াছে, তাহাও বলিতে পারি না। বাড়ীর কর্ত্তা তাহাকে প্রথমে থানায় দিয়াছিলেন। শেষে জহরকে পাগল বলিয়া স্থির করিয়া অব্যাহতি দেন। কাল সন্ধার পর জহর ফিরিয়া আসিয়াছে। সেই অবধি সে কোন জিনিষ খায় না, কাহারও সহিত কোন কথা কয় না, কেবল কাঁদিতেছে। এমন কেন হইল ঠাকুর? কোন্ পাপে আমার রোজগারি ছেলের এ দুর্দ্দশা হইল?”