একেবারে একটা বোঝাবিশেষ। রোজ রোজ যদি একটি করে কবিতা লিখে শেষ করতে পারি তাহলে জীবনটা বেশ একরকম আনন্দে কেটে যায়—কিন্তু এতদিন ধরে সাধনা করে আস্চি ওজিনিষটা এখনো তেমন পোষ মানেনি—প্রতিদিন লাগাম পরাতে দেবে তেমন পক্ষীরাজ ঘোড়াটি নয়! আর্টের একটা প্রধান আনন্দ হচ্চে স্বাধীনতার আনন্দ—বেশ আপনাকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া যায় তার পরে আবার এই ভবকারাগারের মধ্যে ফিরে এসেও অনেকক্ষণ কানের মধ্যে একটা ঝঙ্কার, মনের মধ্যে একটা স্ফুর্ত্তি লেগে থাকে। এই ছোট ছোট কবিতাগুলো আপ্নাআপ্নি এসে পড়চে বলে আর নাটকে হাত দিতে পারচিনে। নইলে দুটো তিনটে ভাবী নাটকের উমেদার মাঝেমাঝে দরজা ঠেলাঠেলি করচে। শীতকাল ছাড়া বোধহয় সেগুলোতে হাত দেওয়া হয়ে উঠ্বে না। চিত্রাঙ্গদা ছাড়া আমার আর সব নাটকই শীতকালে লেখা। সে সময়ে গীতিকাব্যের আবেগ অনেকটা ঠাণ্ডা হয়ে আসে—অনেকটা ধীরেসুস্থে নাটক লেখা যায়।
পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
(৯৩)