পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

পাবনায় প্রাদেশিক সম্মেলনের অভিভাষণে পল্লীসংগঠন সম্বন্ধে তিনি যে সব উপদেশ দিয়াছিলেন, অতুলবাবু ও তাঁহার কর্মিসংঘের সহায়তায় রবীন্দ্রনাথ কালিগ্রাম পরগণায় সেই সবই কার্যে পরিণত করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। কাজও বেশ ভাল চলিতেছিল। অতুলবাবু ও তাঁহার কর্মিসংঘের উৎসাহের অন্ত ছিল না। সর্বপ্রকার পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকারের জন্যই তাঁহারা প্রস্তুত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ নিজেও তাঁহার জীবনের স্বপ্ন সফল হইতে চলিল দেখিয়া বিশেষ আনন্দলাভ করিয়াছিলেন। এই সময়ে অতুলবাবুকে তিনি যে সব পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে এই ভাবটি বেশ পরিস্ফুট। কিন্তু বিধাতা অলক্ষ্যে বোধ হয় ক্রূর হাস্য করিতেছিলেন। এত বড় একটা মহৎ প্রচেষ্টা সফল হইতে চলিল, গ্রামবাসীরা শিক্ষিত যুবকদের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হইয়া নিজেদের উন্নতি সাধন করিতে লাগিল, সরকারী গোয়েন্দা পুলিস বিভাগের বোধ হয় কিছুতেই সে দৃশ্য সহ্য হইল না। অতুলবাবু ও তাঁহার দলবল পূর্ব হইতেই বিপ্লববাদী বলিয়া সন্দেহভাজন ছিলেন। এই সন্দেহের সুযোগ লইয়া গোয়েন্দা পুলিস একদিন তাঁহাদের সকলকে গ্রেপ্তার করিল এবং সরকারী আদেশে তাঁহারা অন্তরীণ বা নজরবন্দী হইলেন। কালিগ্রাম পরগণায় প্রায় এক বৎসর কাজ চলিবার পর এই বিপত্তি ঘটিয়াছিল। রবীন্দ্রনাথ যে ইহাতে প্রবল আঘাত পাইয়াছিলেন, তাহা অনুমানেই বুঝা যাইতে পারে। মাত্র তাঁহার অসাধারণ ধৈর্য ও সংযম বলেই