পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিলালবাবু বললেন সেই নিশীথ সেনের কথা বলছিলুম, দেড়শ টাকা পাচ্ছে আমাদের কলেজে, বললে সোয়া দুশ-আড়াইশ, অন্তত দুশ না-করে দিলে কাজ করতে পারবে না সে । কী করে আমি তাকে দুশ আড়াইশ করে দিই আলি সাহেব ? ‘কেমন প্রফেসর ? কী রকম পড়ায় ?” ‘আছে, পণচ-পাঁচির মতন অণর কি, তা যেমনই হোক না কেন, দেড়শ থেকে সোয়া দুশ-অtড়াইশ কী করে হয় । এত দিন পরে প্রিন্সিপালের টাকা, পঞ্চাশ টাকা বাড়ল মোটে—না, তা হয় কী করে, প্রিন্সিপালের ইনক্রিমেণ্টের অনুপাত ডিঙিয়ে বাড়তে পারে না।’ ‘সে অনুপাতের আধা-অধিও বাড়তে পারে না । সিকিটাও না । প্রিন্সিপালের পঞ্চাশ বাড়লে দশ-বণর টাকার বেশি বাড়তে পারে না অধ্যাপকের’— হিমাংশু চক্রবর্তী বললে । ‘তা ছাড়া একজন মাস্টারের মাইনে যদি বাড়ানো যায় তা হলে অন্যেরা কী দোষ করল ?’ বঙ্কিম দত্ত জিজ্ঞেস করলেন । ব্রজমাধববাবু বললেন, ‘এমন দশ-পনেরটা কেস আমার জানা আছে হরিলালবাবু যে আপনার পেটেীয়া প্রফেসরদের মাইনে বাড়িয়ে দিচ্ছেন আপনি, অন্যদের দাবি উপেক্ষা করে’ । "তাই নাকি ?’ ওয়াজেদ আলি সাহেব হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘লিস্ট আছে আপনার কাছে ? ‘আছে । চল্লিশ, পঞ্চাশ, ষাট টাকা করে বাড়িয়েছেন, যারা ওর পেটেtয়া নয় তাদের গলা কেটে দিনদুপুরে রাহাজানি করে। অনুপাত কষছেন হিমাংশু চক্রবর্তী প্রিন্সিপালের ইনক্রিমেন্টের সিকির ভাগ দেওয়া হবে বলে এক-একজন প্রফেসরকে। কেন ? হরিলালবাবুর জামাই কামাখ্যা ঘোষালকে ষাট টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হল এক লাফে এক ডাকে । অণপনার শলা ধরণী মজুমদারকে পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হল কেন হরিবাবুর এক কথায়, সেটা আমাদের খুলে জানাবেন কি চক্কোত্তি মশাই। হরিলালবাবুর গোমূত্র পান করার জন্য আপনার মানুষ খুন করতে পারেন দিনে-দুপুরে—পৌষমাস করে বেড়াতে পারেন কীর্তিক মাসের কুকুরগুলোর মত। এক মিনিট-দু মিনিট নিস্তব্ধ হয়ে রইল সব । SS8