পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্য হতে পারে । যাই হোক না কেন, জিনিসটা মজুমদারকে স্বস্তি দিচ্ছে না । তলিয়ে কথা ভাবতে গেলেই কেমন যেন বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে হয় রবিশঙ্করকে । নিশীথ তার স্কটিশ চার্চ কলেজের সহপাঠীর গড়িতে পাশে বসে উপলব্ধি করছিল । টাকা আছে, কিন্তু স্বাদ নেই যেন । সুখ আছে, কিন্তু সাহচর্য নেই, শান্তির অভাব, পদমর্যাদা আছে কিন্তু এই তো অপমান । অপমানের উৎসটা সত্যি কি মিথ্যে ঠিক করে বুঝে নেবার পথ নেই রবি মজুমদারের । কিন্তু বুঝে উঠতে না পেরে জিনিসটাকে গায়ে মেখে নিয়েছে সে—এতদূর পর্যন্ত—যে সে বলে যে তার কোনো সন্তানই তার নিজের নয। তা হয় তো ঠিক নয় । কিন্তু মানা মানছে না রবিশঙ্করের মনটা, যেন কিছু দোর্দণ্ড সৌখিনতা ও সুখে উপচে পড়ছে মানুষটার শরীর । শরীরে এত সুখ নিয়ে কি মনে এত অসুখ থাকতে পারে ? রবিশঙ্করের অণতের একটা কথা ভাবতে গিয়ে নিজের মনে যেঅসুখের ছোয়ণচটুকু লেগেছিল, সেটা ঝেড়ে ফেলল নিশীথ । একটা পেটমোটা গন্ধগোকুলের কাছে নিজেকে নীলকণ্ঠ পাখির মত মনে হচ্ছিল নিশীথের । ‘ভার্জিনিয়া এখানকার স্কচ আইরিশ সাহেবদের সঙ্গে বাডবাড়ি করছে । আমি অফিসে যাবার মুখে টুক করে ঢুকে পড়ছে এক-একজন, অফিস থেকে ফিরে এসে দেখি আর-একজনের সঙ্গে গল্পগুজব করছে । যতক্ষণ অফিসে ছিলুম ততক্ষণ কী করছে ? ‘ওদের দেশের যে-সব মেয়েরা আমাদের এ দেশি ছেলেদের বিয়ে করে, সাহেবরা সে-সব মেয়েদের দিকে ঘেঁষে না বলেই তো জানতুম মজুমদার সাহেব ।’ না তা নয়, ওটা আপনার ভুল নিশীথ সেন, বডড খচ্চর ঐ আইরিশগুলো । কী করেছে ওদের সঙ্গে ভার্জিনিয়, কী না করেছে ! —পাইপ কামড়াতেকামড়াতে রবিশঙ্কর বললে । পাইপট জ্বলছিল না ; সেটাকে দণত দিয়ে শক্ত করে কামড়ে ধরে পাতলুনের পকেটে ডানহাতটা ঢোকাল, হয় তো দেশলাই কিংবা পাউচ বণর করবার জন্যে । ‘অইরিশ না, স্বচরণ ? ‘আইরিশর’—রবিশঙ্কর বললে । “কিন্তু আপনার স্ত্রী তো স্কচ । ‘ই্যা । কিন্তু আইরিশরা—’ "এ দেশে এত—ওরা তো— ૨૨ છે