পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*অর্চনা মাসির কাছে চেয়েছিল—” ‘কে ? গনি ?" 'না, মোনতাজ ।” ‘কোন মোনতাজ ? ঐ যে ঘড়ি অণলা অগস্তাবলের গাড়োয়ান ? ‘ইস । মহিমবাবু তখন কলেজে গেছেন, ছেলে ইস্কুলে গেছে—মোনতাজ সজনে গাছের পাশের সদর রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে, সওয়ার নামিয়ে দিয়ে, এদিকে চলে এল, সোজা মহিমবাবুর ঘরে ঢুকে, চেয়ারে বসে, জিজ্ঞেস করল বিড়ি আছে কি না”— "জিজ্ঞেস করল মৌনতাজ ? ‘কেন জিজ্ঞেস করবে না, বিড়ির দরকার তার ।" ‘চেয়ারে চড়ে বসেছিল ?’ চেন্নবি তো মানুষের জন্যে, মানুষ তো চেয়ারের জন্যে নয় । এটা বুঝতে চাচ্ছে ন সুমনা, বোঝানো বড় কঠিন, ভাবছিল হরীত । ‘কী করল অর্চনা ?’ ‘বলছি তোমাকে, হরীত একটা বিড়ি জ্বালিয়ে তৎক্ষণাৎ সেটা নিভিয়ে সরিয়ে রাখল। কী বলছে, কী করছে, কোথায় আপছে—খেয়ালই ছিল না কিছু তার । ‘কবে হল এ সব ? এই তো পরশু দুপুরবেলা । আমি বাড়ি ছিলাম না, তুমি ঘুমুচ্ছিলে’— ‘কী হল তার পর—বিড়ি চাইল মোনতাজ ?? ‘মহিমবাবু তো তামাক খান না । কিন্তু মহিমবাবুর ছেলে ক্লাস সিক্সে পড়ে, সে একতাল চাদ-তারা মার্ক বিড়ি কিনে এনে লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল। মাঝেমাঝে ব্যাঙের আধুলির মত বার করে খেয়ে নেয়, বাপ তো টেরই পায় না, মা সেটা বুঝতে পেরেছে, বৰ্ণমাল ধরেও ফেলেছে। তবে পয়সার মাল, ফেলে দেয় নি, নিজের হেফাজতে লুকিয়ে রেখেছে। সেখান থেকে বের করে দুটো বিড়ি দিয়ে দিল মোনতাজকে । এ রকম দিচ্ছে আজকাল ভদ্রঘরের বেীরা, শুনছি তো!’ সুমনা জানালা দরজার দিকে মুখ ফিরিয়ে ফুরফুর করে যে-বাতাস আসছিল সেটার দিকে তাকিয়ে নিল যেন এক বার, ‘কী করলে মোনতাজ ? Ꮼ86: