পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতন্যদেব । ዓ @ চৈতন্যদেব গঙ্গাস্নানে যাইয়। লোকের উপর অত্যন্ত উপদ্ৰব করিতেন । তিনি কুলকুচা করিয়া সেই জল লোকের গায়ে দিতেন, কখনও জল ছিটাইয়া কাহার ও ধ্যানভঙ্গ করিয়া দিতেন, কখনও স্নানার্থীদিগের শুষ্ক কাপড় লইয়া লুকাইয়া রাখিতেন, কখনও ডুব-সাঁতার কাটিয়া স্ত্রীলোকদিগের পদদ্বয়ের মধ্যে ভাসিয়া উঠিতেন, আবার কাহারও বা পা ধরিয়া টানিতেন। তঁহার দৌরাত্মোর কথা লইয়া প্রায়ই সকলেই শচী দেবীর নিকট অনুযোগ করিতে আসিত। শচী দেবী কাহাকেও মিষ্ট কথা বলিয়া, কাহার ও কাছে ক্ষমা প্ৰাৰ্থনা করিয়া, তাহাদিগকে বিদায় করিতেন। এক দিবস শচী দেবী নিমাই এর দুরক্তিতাব জন্য অসন্তুষ্ট হইয়া তাহাকে প্রচার করিতে উদ্যত চাইলে, তিনি পলাইয়া আঁস্তাকুড়ে যােষ্টয়া দাড়াইয়। থাকেন। তিনি জানিতেন যে, মা কখনই এই স্তানে আসিতে পরিবেন। না । যাহা হউক, তিনি পুত্রকে স্নান করিয়া আসিতে বলেন । নিমাই মাতার কথা শুনিয়া বলেন, “মা ! এই আস্তাকুড় অপবিত্র নহে, মানুষ যাহাতে অপবিত্র হয়, তাহা মানুষের হৃদয়েই আছে ।” কিছুদিন পরে জগন্নাথ পুত্রকে পাঠশালায় পাঠাইয়া দেন। নিমাই অতিশয় বুদ্ধিমান ছিলেন। অল্প দিবসের মধ্যেই পাঠশালার পাঠ শেষ করিয়া সংস্কৃত পড়িতে আরম্ভ করেন। ঐ সময়ে বিশ্বরূপ প্ৰায় যৌবনসীমায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন । নানাশাস্ত্ৰে তাহার বিশেষ জ্ঞানলাভ হইয়াছিল। জগন্নাথ মিশ্র পুত্রের বিবাহ কাল উপস্থিত দেখিয়া, তাহার বিবাহ দিবার জন্য চেষ্টা করেন। বাল্যকাল হইতেই বিশ্বরূপ সংসারের প্ৰতি বীতরাগ ছিলেন। তিনি বিবাহের প্রস্তাব শুনিয়া রাত্ৰিযোগে গৃহ পরিত্যাগ করিয়া সন্ন্যাসাশ্রম গ্ৰহণ করেন। বৃদ্ধ মাতা পিতা, পুত্ৰ-বিরহে শোক-সাগরে নিমগ্ন হন। ঐ সময়ে তঁাহারা কেবল চৈতন্যের মুখচন্দ্ৰ। নিরীক্ষণ করিয়া বিশ্বরূপের কথা কিয়দংশ ভুলিয়াছিলেন। নিমাইএর