পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবনী-সংগ্ৰহ । সে পথ স্পর্শ করিতে ঘূণার পরিবর্তে আগ্ৰহ প্ৰকাশ করিয়া থাকে । লোকে তখন একবারও মল-মূত্রের কথা ভাবিয়া দেখে না। মন! তুমি কখনই ঘুণিত পদার্থে লোভ করিও না।” রামকৃষ্ণের সেই সময়ের অবস্থা দেখিয়া রাসমণির জামাতা মথুর বাবু হঁহাকে কয়েকবার পরীক্ষা করিয়াছিলেন। তিনি কয়েকটী নবযৌবনসম্পন্ন, সুরূপ বারাঙ্গনা আপনার বাগান-বাটীতে আনাইয়া, যাহাতে রামকৃষ্ণের চিত্ত-চাঞ্চল্য ঘটে, সেইমত কাৰ্য্য করিতে বলিয়া রামকৃষ্ণকে তথায় আনয়ন করেন ; কিন্তু রামকৃষ্ণের মন কিছুতেই বিচলিত হয় নাই। “লোকলজ্জার ভয়ে রামকৃষ্ণ এইকাৰ্য্যে প্ৰবৃত্ত হইতেছে না-গোপনে কাৰ্য্য করিতে বোধ হয় ইচ্ছা আছে,” এইরূপ ভাবিয়া মথুর বাবুইহাকে লইয়া তীর্থদর্শনে বহির্গত হন। মথুর বাবু কাশী, গয়া, বৃন্দাবন প্রভৃতি কয়েকটী তীর্থস্থান বেড়াইয়া যখন দেখিলেন, রামকৃষ্ণের সঙ্কল্প অতি দৃঢ়, তখন কলিকাতায় ফিরিয়া আইসেন। এই সময়ে রামকৃষ্ণ কয়েকজন শিষ্য প্ৰাপ্ত হন। শিষ্যগণ র্তাহার মুখে নানাবিধ ধৰ্ম্মোপদেশ শ্রবণ করিয়া সংসারের ভীষণ জ্বালা সকল ভুলিয়া অপাের আনন্দ অনুভব করেন। রামকৃষ্ণ রীতিমত পাঠাভ্যাস করেন নাই, তন্ন তন্ন করিয়া শাস্ত্রালোচনা করেন নাই, ভাষাজ্ঞান সম্বন্ধে ইনি একে বারে অজ্ঞ ছিলেন ; কিন্তু ইহার উপদেশ যিনিই শুনিয়াছেন, তিনিই মুগ্ধ হইয়াছেন। ইহার এই অসাধারণ ক্ষমতা ছিল বলিয়াই, লোকে ইহাকে ভক্তির চক্ষে দেখিয়াছিল। ইহার অমৃততুল্য উপদেশাবলী ক্ৰমে যতই প্রচার হইতে লাগিল, ততই শিষ্যসংখ্যাও বৰ্দ্ধিত হইতে লাগিল। নব ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম প্ৰবৰ্ত্তক কেশবচন্দ্ৰ সেনও ইহার উপদেশাবলী পরম সাদরে গ্রহণ করিয়া গিয়াছেন। নাট্যবিনোদ গিরিশচন্দ্র ঘোষের পূর্ব চরিত্রের বিষয় বোধ হয় অনেকেই