পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঘুনাথ দাস। ՀՊՏ তিনি এইরূপে কিছুদিন অতিবাহিত করিয়া বুঝিলেন, ভিক্ষা করিয়া ভোজন করাও র্তাহার অন্যায়, অগত্যা তাহাও পরিত্যাগ করিয়া প্ৰসােদান্ন-বিক্রেতাদের পরিত্যক্ত অন্নভোজনে প্ৰবৃত্ত হইলেন। অবিক্রীত অন্ন পচিয়া যাইলে যখন তাহারা পয়ঃপ্ৰণালী মধ্যে ফেলিয়া দিত, রঘুনাথ সেই অন্ন ধৌত করিয়া ভোজন করিতেন। রঘুর কোন কাৰ্য্যই গৌরাঙ্গের অগোচর থাকিত না। যে দিন তিনি শুনিলেন, রঘুনাব প্ৰসাদ ভোজনের আয়োজন করিতেছেন, সে দিন তিনি আর কিছুতেই আপনি কুটীরে স্থির থাকিতে পারিলেন না। প্রেমের ভরে দৌড়িয়া আসিয়া দেখেন, রঘু গদগদাচিত্তে উক্ত অন্ন ভোজন করিতেছেন। গৌরাঙ্গ রঘুকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “রঘু! তুমি এমন বস্তু খাও, আর আমাকে দাও না ?” এই কথা বলিয়া তিনি রঘুর উচ্ছিষ্ট পাত হইতে এক গ্ৰাস তুলিয়া আপন মুখে অর্পণ করিলেন। দ্বিতীয় গ্ৰাস লাইবামাত্র রঘু সঙ্কুচিত হইয়া বলিলেন, “প্ৰভু ! করেন কি, এ আহার কি আপনার যোগ্য ?” চৈতন্যদেবের তিরোধানের পর রঘুনাথ বৃন্দাবনে গমন করিয়া রাধাকুণ্ডে বাস করিতে লাগিলেন। তথায় তিনি যোগবলে দেহ পরিত্যাগ করেন। রঘুনাথ দাসের কয়েকখানি ক্ষুদ্র কলেবরের গ্ৰন্থ বৈষ্ণবসমাজে অতি আদরের সহিত ব্যবহৃত হইয়া থাকে। উপদেশামৃত, মনোশিক্ষা, শ্ৰীচৈতন্যস্তবকল্পবৃক্ষ, বিলাপ-কুসুমাঞ্জলি ও শ্ৰীপ্রেমাম্বুজমকরন্দাখ্যন্তবরাজ বিশেষ প্ৰসিদ্ধ ।