পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RR জীবনী-সংগ্ৰহ । ছিলেন ; কিন্তু মৃত্যুর নিকট কি পরিত্ৰাণ পাইয়াছিলেন ? বৎস! আমার কথা রাখ, আমায় পরিত্যাগ করিও না।” পিতার উপদেশ-বাক্য শ্রবণ করিয়া সিদ্ধাৰ্থ বলিয়াছিলেন, “পিতঃ! এই পরিবর্তনশীল অনিত্য সংসারের ঘটনাবলী আমি যখন চিন্তা করিতে আরম্ভ করি, বাহিরের কোলাহল ও উদ্ভান্ত ভােব পরিত্যাগ করিয়া শান্ত ও ধীরভাবে আপনার আত্মার ভিতরে অবতরণ করিয়া সাংসারিক বিষয় যখন ভাবনা করি, তখন স্বাভাবতঃ প্ৰাণে এই প্রশ্ন হয়।-এই অস্থায়ী জগতে স্থায়ী কি ? আমার চিরদিনের সঙ্গী নিজস্ব পদার্থ কি ? আত্মার অপরিবর্তনীয় নিত্য আনন্দপ্রস্রবণ কোথায় ? তখন পুত্র-কলাত্র, আত্মীয়, বান্ধব ও সংসারের সুখসৌভাগ্য, আমার অকিঞ্চিৎকর বলিয়া বোধ হয়। এই আত্ম-চিন্তা হৃদয়ে জাগ্রত হইলেই আসক্তির বন্ধন ছিড়িয়া যায়-সংসার-মায়া শিথিল হয়। ংসারের অনিত্যতা-চিন্তাই ধৰ্ম্মের অন্ধুর। ভগ্ন অট্টালিকা-বাসী যেমন অট্টালিকার পতনোমুখ অবস্থা দেখিয়া, সত্বর তাহা পরিত্যাগ করিয়া নিরাপদ স্থানে আশ্রয় অন্বেষণ করে, ধৰ্ম্মপিপাসু মানব সেইরূপ জরােমরণসস্কুল সংসারের অস্থায়িত্ব চিন্তা করিয়া প্ৰাণপণে তাহা পরিত্যাগ করেন। আপনি আমায় অনুমতি করুন, আমি চিরানন্দময়, চিরসুখময়, শোকতাপজরামরণশূন্য অমৃতধ্যামের দিকে অগ্রসর হই।” মহারাজ শুদ্ধোদন পুত্রের সঙ্কল্প দৃঢ় জানিয়া, শোকবিদগ্ধহৃদয়ে সাশ্রনয়নে পুত্রকে উদাসীন হইতে অনুমতি দেন। গোপা প্ৰেমপূৰ্ণবাচনে কত বুঝাইয়াছিলেন, অশ্রদ্ধারায় ধরাতল সিক্ত করিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি কাহারও মমতায় বিমুগ্ধ হন নাই। এই ঘটনার কিছুদিন পূর্বে সিদ্ধার্থের একমাত্র পুত্র রাহুল জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। পাছে পুত্রের উপর অধিক মমতা জন্মাইয়া আপনার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়, এই ভয়ে ভীত হইয়। তিনি সেই দিবস প্ৰশান্ত গভীর রজনীযোগে গৃহ পরিত্যাগ করিতে মনস্থ করেন। রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর অতীত