পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8 জীবনী-সংগ্ৰহ । AAN শ্রমণ ! * তোমার এমন হৃষ্ট পুষ্ট নধর আকৃতি দেখিতেছি, তবে কেন তুমি ভিক্ষা করিয়া বেড়াইতেছ ? তুমি কি পরিশ্রম না করিয়া অন্যের শ্রমোপাজ্জিত শস্যসকল অনায়াসে লাভ করিতে চাও? তুমি কি জান না, কত কষ্টে শস্ত উৎপন্ন হয় ? আমরা প্ৰচণ্ড রৌদ্রে পুড়িয়া, প্ৰবল বৃষ্টিতে ভিজিয়া, ভূমি কর্ষণ ও বীজ বপন করি, তবে তাহা হইতে শস্ত উৎপন্ন হয়। আমাদের এই কঠোর পরিশ্রমের অর্জিত শস্ত তুমি অনায়াসে লাভ করিতে চাও ! তোমার উচিত আমাদের মত পরিশ্রম করা । তোমার মত বলবান ব্যক্তি যদি পরিশ্রম না করিয়া ভিক্ষা করে, তাহা হইলে বিকলাঙ্গ ব্যক্তিগণ কি করিবে ? আমি তোমায় এক খণ্ড ভূমি দিতেছি, তুমি তাহা কৰ্ষণ করিয়া শম্ভ উৎপন্ন কর এবং সেই শম্ভের দ্বারা জীবিকানির্বাহ কর।” বুদ্ধদেব বণিকের কথা শ্রবণ করিয়া বলেন, “আপনার কথা সত্য, কিন্তু আমিও ভূমি কর্ষণ করিয়া থাকি ; তবে আমার কর্ষণোপযোগী ভূমি, বীজ ও শস্ত স্বতন্ত্র। মানবের হৃদয় আমার ভূমি, জ্ঞান আমার হল, বিনয় তাহার ফল এবং উৎসাহ ও উদ্যম আমার বলদ । হৃদয় রূপ ভূমি কৰ্ষিত হইলে বিশ্বাস রূপ বীজ তাহাতে বপন করিয়া দিই। ঐ বীজ অঙ্কুরিত হইয়া নিৰ্ব্বাণ রূপ ফসল উৎপন্ন হয়। ঐ ফসলই আমি তৃপ্তির সহিত আহার করিয়া থাকি।” ভরদ্বাজ গৌতমের বা মহদীর্থযুক্ত বাক্য শ্রবণ করিয়া, তাহার প্রতি

  • বৌদ্ধ যোগীদিগকে শ্ৰমণ বলে।

+ মহারাজ শুদ্ধোদনের দ্বিতীয়া পত্নীর নাম গৌতমী। মায়াদেবীর দেহান্তর হইলে, সিদ্ধার্থের লালনপালনের ভার গৌতমী গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। গৌতমী সিদ্ধার্থকে অতিশয় স্নেহ করিতেন। বলিয়া, গৌতমীর সখিগণ সিদ্ধার্থকে গৌতম বলিয়া আদর করিতেন। সেই অবধি সিদ্ধার্থের অপর নাম গৌতম হয়।