বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাকাকে ভাই বলে বসে ঘোষাল, বলে খেয়ালও হয় না, পাতানো মেসো শালী-পুত সম্পর্ক, ভাই বলার সম্পর্ক নয়। অতিরিক্ত তীক্ষ্ম বুদ্ধির রকমই এই, কয়েকটা ফলা চকচকে ধারালো হয়, কয়েকটা মর্চে ধরে মেরে যায় ভেঁাতা। শুভদি আমায় আচার খাওয়াতে বড় ভালবাসতেন। কি শখ ছিল। আচার করার। দিনাজপুরে একবার আমাকে সাতরকম আচার খাইয়েছিলেন, তুমি তখনো জন্মাও নি। মা তো কখনো বলে নি আপনার কথা ? বলেছে, তুমি ভুলে গেছ। এতক্ষণে পাকাকে একটু নরম, একটু উৎসাহী মনে হয়। বলে, মারি এগারটা আচারের জার ছিল। শ্মশান থেকে ফিরে আমি সব কটা ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিলাম। বলুন না মেসোমশাই, আচারের জার দেখে, কাৰ্পেট দেখে, ফটো দেখে মাকে মনে রাখতে হবে ? ও রকম মনে নাই বা রাখলাম ! বোসো পাকা, দাড়িয়ে কেন ? ঘোষাল তার সঙ্গে সস্নেহে আলাপ করেএবার গুরুজনের বদলে খানিকটা বন্ধুর মত সস্নেহে। R সুধার কাছে সগৰ্বে বলে পাকা, জানো নতুন মামী, আমি ইচ্ছে করলেই কালীদাকে আচ্ছা জব্দ করতে পারতাম। ঘোষাল মেসোমশায়কে বলে দিলেই হত । নাম কাটার মজা টের পেত। কালীদা । ইচ্ছে করে বললাম না । সুধা চমকে ওঠে, কি বললে না পাকা ? তা শুনে কি করবে তুমি ? শোধ নিতে পারতাম, নিলাম না, বাস। সুধা হাত চেপে ধরে পাকার, আমায় বলে । দারুণ বিব্রত হয়ে পড়ে পাকা। এ কি মুশকিল হল ? বলবে নতুন মামীকে ? না বললে ভয়ানক রাগ করবে নতুন মামী। কিন্তু বললে যদি জানাজানি হয়ে যায়? যে গল্প করার স্বভাব নতুন মামীর! V