বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ত্রিপুরার স্মৃতি.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ব্যক্তি ঐস্থানে কোনও শিলাফলক সংলগ্ন থাকিতে দেখিয়াছে বা শুনিয়াছে কিনা এই বিষয় বহু অসুন্ধানেও জ্ঞাত হওয়া যায় না।

 ত্রিপুররাজ-কুলোদ্ভবা দ্বিতীয়া দেবী নাম্নী জনৈক মহিলা-কর্ত্তৃক বর্ণিত দুইটী মন্দির নির্ম্মিত হইয়া তন্মধ্যে যে চণ্ডীমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, এবং পর্ব্বতপ্রান্তদেশস্থ বর্ত্তমান দৈত্যের দীঘী (দ্বিতীয়ার দীঘী) নামে খ্যাত সরোবর যে তৎকর্ত্তৃক খনিত, এই সমস্ত কথা অধুনা সর্ব্বসাধারণের স্মৃতি হইতে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হইয়াছে। প্রকৃত বিষয় জ্ঞাত না হইয়া ভ্রমবশতঃ কেহ কেহ অত্রস্থ মন্দিরদ্বয় গোপীচাঁদের নির্ম্মিত-ও বলিয়া থাকে।

 জনশ্রুতি এই—উভয় মন্দিরই বহুদিন যাবৎ পরিত্যক্ত ছিল। ১৩২৫ বঙ্গাব্দে চাঁদপুর-নিবাসী নিবারণচন্দ্র চক্রবর্ত্তী নামক জনৈক ব্রাহ্মণ ধাতুবিশেষ-নির্ম্মিত সুবর্ণ পত্রে মণ্ডিত এক অষ্টভুজা শক্তিমূর্ত্তি প্রাগুক্ত মন্দিরদ্বয়-মধ্যের একটীতে প্রতিষ্ঠিত করে। মূর্ত্তিটী কুমিল্লা-নিবাসী মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্য্যের সাহায্যে বগাসাইর পরগণার অন্তঃপাতী দৌলবাড়ী গ্রামস্থ বৈকুণ্ঠ চক্রবর্ত্তীর নিকট হইতে উক্ত নিবারণচন্দ্র চক্রবর্ত্তী কর্ত্তৃক আনীত হইয়াছিল। ঐ মূর্ত্তি উল্লিখিত গ্রামের এক পুষ্করিণী হইতে উদ্ধৃত হইয়াছিল বলিয়া অবগত হওয়া যায়।

 উল্লিখিত মূর্ত্তি ১৩২৪ বঙ্গাব্দে আনীত হইলেও নানা কারণ বশতঃ তৎকালে উহা প্রতিষ্ঠিত হয় নাই, তদনন্তর প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। দুঃখের বিষয়—যে বর্ষে দেবীমূর্ত্তিটী প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, সেই বর্ষেরই মাঘের এক রজনীতে উহা অপহৃত হয়, এবং এযাবৎ তাহার কোন অনুসন্ধান প্রাপ্ত হওয়া যায় নাই।

 ঢাকা নগরীর কৌতুক-সংগ্রহালয়ে বর্ণিত মূর্ত্তির যে আলোকচিত্র গৃহীত হইয়াছিল তদ্দৃষ্টে ইহার শিল্প-চাতুর্য্যের প্রশংসা করিতে হয়। মূর্ত্তিটীর কারুকৌশল পর্য্যবেক্ষণ করিয়া কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি উহা হস্তগত করিবার প্রয়াস পাইয়াছিলেন, কিন্তু নিবারণচন্দ্র চক্রবর্ত্তী কোন মতেই হস্তান্তর করিতে স্বীকৃত হয় নাই বলিয়া তৎকর্ত্তৃক কথিত হয়।

 প্রাগুক্ত শক্তিমূর্ত্তির পাদপীঠে যে লিপি উৎকীর্ণ আছে বলিয়া নিবারণচন্দ্র চক্রবর্ত্তী কহে, তাহা নিম্নে প্রদত্ত হইল।

“স্বস্তি শ্রীখড়্গোদ্যমো রাম নরাধিরাজঃ।
তৎসুনুরাসীদ্‌ভূবিজাতখড়্গঃ॥

১৬
ত্রিপুরার স্মৃতি