পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।


 মশা বলিলেন,— “এ? মেয়েটা নিতান্ত বোকা! একেবারে বদ্ধ পাগল! কিছু জানে না! এই ভারতের মানুষগুলো বড় বোকা! কাণ্ডজ্ঞান-বিবর্জ্জিত। রক্তবতী শিশু বটে, কিন্তু এর চেয়ে আমার রক্তবতীর লক্ষগুণে বুদ্ধিশুদ্ধি আছে। তুমি বল তো মা, রক্তবতী, ভারতের মানুষ কিসের জন্য সৃজিত হইয়াছে?”

 রক্তবতী বলিলেন,— “কেন বাবা! আমরা খাব বলিয়া তাই হইয়াছে।”

 মশা বলিলেন,— “এখন শুনিলে? ভারতের মানুষ কিসের জন্য হইয়াছে তা বলিলে?”

 কঙ্কাবতী উত্তর করিলেন,— “আজ্ঞা হাঁ, এখন বুঝিলাম। মশারা আহার করিবেন বলিয়া তাই মানুষের সৃজন হইয়াছে।”

 “আমার পচাজল মানুষের ছানা বই তো নয়! মানুষদের বুদ্ধিশুদ্ধি নাই, তা সকল মশাই জানে। নির্ব্বোধ মশাকে সকলে মানুষ বলিয়া গালি দেয়। সকলে বলে, 'অমুক মশা ত’ মশা নয়—ওটা মানুষ। তা আমাদের মত পচাজলের বোধ-শোধ কেমন করিয়া হইবে। আমার পচাজলকে বাবা, তুমি আর বকিও না!”

 মশা ভাবিলেন,— “সত্যকথা! মানুষের ছানাটাকে আর কোনও কথা জিজ্ঞাসা করা বৃথা। আমাকে নিজেই সকল সন্ধান লাইতে হইবে।”

 মশা জিজ্ঞাসা করিলেন,— “বলি হাঁগো মেয়ে! এখন তোমার বাড়ী কোন গ্রামে বল দেখি? তা' বলিতে পরিবে তো?”

কঙ্কাবতী
৯৯