এককড়ি জলের নিকট গঙ্গাতীরে বসিলেন। নিধিরাম প্রথম তাঁহার চরণ-ধূলি লইয়া আপনার মস্তকে রাখিলেন। তাহার পর আপনার কণ্ঠদেশ পর্যন্ত গঙ্গাজলে নিমগ্ন করিলেন। এককড়ির বক্ষঃস্থলে মাথা রাখিয়া অৰ্দ্ধশায়িতভাবে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। হাতে পৈতা জড়াইয়া জপ করিতে লাগিলেন। ওঁ গঙ্গা নারায়ণ ব্রহ্ম, ওঁরামঃ। হরে হরে রাম রাম, রাম রাম হরে হরে। ওঁ গঙ্গা নারায়ণ ব্রহ্ম, ওঁরামঃ।
হিরণ্ময়ী মৃদুমধুর ভাবে নবীনকে বলিলেন,— “বাঙ্গাল কি করিতেছে দেখ! ঠাট করিয়া আবার বাবার কোলে শোয়া হইয়াছে।”
নিধিরাম সেই নৌকাপানে একদৃষ্টি অনিমিষ-নয়নে চাহিয়া রহিলেন। এককড়ি দেখিলেন যে, নৌকাখানি যতই দূরে যাইতে লাগিল, আর নিধিরামের শরীর ততই অবশ, অবসন্ন গুরু হইতে লাগিল। মোড় ফিরিয়া যেই নৌকাখানি অদৃশ্য হইল, আর নিধিরামের প্রাণ-বিয়োগ হইল।
ওঁ গঙ্গা নারায়ণ ব্রহ্ম, ওঁ রামঃ। হরে হরে রাম রাম, রাম রাম হরে হরে। ওঁ গঙ্গা নারায়ণ ব্রহ্ম। ওঁ রামঃ।