পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটি নূতন বাড়ীতে যাইলে প্রথমেই সে কোথায় ইদুর আছে, কোথায় আরসালা আছে, তাহার জন্য গলি-যুঁজি এ-কোণ সে-কোেণ আঁকিয়া ফোঁশ-ফোশ করিয়া বেড়াইত। কিন্তু আজ সেই কুকুরের ব্যবহার দেখিয়া আমি বড়ই আশ্চৰ্য হইলাম। প্রথমতঃ সে সেই বাড়ীর ভিতর কিছুতেই প্ৰবেশ করিবে না। অনেক আদর করিয়া ভুলাইয়া যদিও প্রবেশ করাইলাম, কিন্তু ভয়ে একবারে জড়সড় হইয়া গেল। পদদ্বয়ের ভিতর লাঙ্গুল রাখিয়া কুণ্ডলী হইয়া সে কঁাপিতে কাপিতে আমার পায়ে পায়ে জড়াইতে লাগিল। লম্প-ঝম্বফ নাই, শব্দ নাই, ইন্দুর অনুসন্ধান নাই। আজ সে নীরব, আজ তাহার কিছুই নাই। গৃহমধ্যে প্রবেশ করিয়া আমরা এ-ঘর সে-ঘর বেড়াইয়া দেখিতে লাগিলাম। প্ৰকাণ্ড অট্টালিকা, একতলা দোতলা, তেতলায় কত যে কামরা তাহা বলিতে পারি না। দেখিতে দেখিতে আমরা বৃহৎ একখানি ঘরে গিয়া উপস্থিত হইলাম। এই ঘরের ভিতর ভূতের দৌরাত্ম্য যাহাকে বলে, তাহার প্রথম সূচনা হইল। ঘরটি আমার চাকর পরিষ্কার করে নাই। মেজেতে নিবিড় ধূলা পড়িয়াছিল। কোথায় কিছু নাই, হঠাৎ দেখিলাম, আমার ঠিক সম্মুখে একটি পায়ের দাগ পড়িল । শিশুর পদচিহ্ন। তাহার আগে, কি আশেপাশে আর দাগ নাই, কেবল সেই একটি দাগ মাত্র। অগ্রসর হইয়া সেই পদচিহ্নের উপর আমার নিজের পা রাখিলাম। আমনি, ঠিক সেই সময়ে আমার সম্মুখে আর একটি পায়ের দাগ পড়িল। আমি চাকরের গা টিপিলাম, চাকরও আমার গা টিপিল। এইরূপে যতই যাই, আগে আগে ধূলার উপর ততই এক একটি শিশুপদচিহ্ন অঙ্কিত হইতে থাকে। কিন্তু কেবল এক পায়ের চিহ্ন, দুই পায়ের দাগু পড়ে না। যখন ঘরের অপর প্রান্তে প্রাচীরের নিকট গিয়া উপস্থিত হইলাম, তখন আর | | সে ঘর হইতে বাহির হইয়া আমরা অন্যান্য করিতে লাগিলাম। ক্রমে একখানি বড় ঘরে গিয়া বসিলাম। তখন রাত্রি য়াছেঃ র বাতি জ্বালাইয়া আমার সম্মুখে টেবিলের উপর রাখিল । সহসা ঘরের অন্যদিক ইউক্ত একখানি চৌকি আকাশপথে উড়িয়া ঠিক আমার সম্মুখে পড়িল। আমি বলিলাম,- స్టోya কথা নয়! ক্ৰমে দেখিলাম, সেই চৌকির উপর যেন কি বসিয়া রহিয়াছে। মানবের আকৃতি বটে, কিন্তু তাহার দেহ যেন অতি তরল ধুম দ্বারা গঠিত। কুকুরটি ভয়বিহ্বল হইয়া ঘোরতর আৰ্ত্তনাদ করিতে লাগিল। চাকর তাহাকে সান্তুনা করিতে গেল। ঘাড় হেঁট করিয়া কুকুরকে সান্তুনা করিতেছে, এমন সময় হঠাৎ আমার দিকে ফিরিয়া সে জিজ্ঞাসা করিল,- “মহাশয় কি আমি উত্তর করিলাম,- “না, কি হইয়াছে?” চাকর বলিল,- “আমার পিঠে কে ভয়ানক একটা কিল মারিল।” আমি বলিলাম,- “এসব কারখানা বোধ হয় বদমায়েশ লোকের। কি করিয়া করিতেছে, ধরিতে পারিতেছি না। যাহা হউক, ইহার নিগুঢ় তত্ত্ব বাহির না করিয়া আমি ক্ষান্ত হইব না।” এক্ষণে এ-ঘর পরিত্যাগ করিয়া আমরা দ্বিতলে গিয়া উঠিলাম। আমার শয়নঘর। এই তলায় নির্দিষ্ট হইয়াছিল। কিন্তু এখনও নিদ্রা যাইবার সময় হয় নাই। সুতরাং এই তলায় অন্যান্য ঘর পরিদর্শন করিতে লাগিলাম। একটি ক্ষুদ্ৰ কামরার নিকট উপস্থিত হইয়া চাকর বলিল,— “এ কি হইল! এ ঘরের দরজা বন্ধ কেন? আমি এইমাত্র ইহার চাবি খুলিয়া কপাট উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছি।” আমি দ্বার টানিয়া দেখিলাম, ভিতর হইতে কে খিল বন্ধ করিয়া দিয়াছে। বিস্ময়ে দ্বারের দিকে চাহিয়া আছি, এমন সময়ে, আশ্চৰ্য্য! দ্বার আস্তে আস্তে আপনি খুলিয়া গেল। _Ajaii w8wo gऊों sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro