পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখন এলোকেশী আমাকে ছাড়িয়া— “তবে রে আটকুড়ীর বেটার!” বলিয়া তাঁহাদের মারিতে দৌড়িলেন। আমি অব্যাহতি পাইলাম। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে নয়। দুর্লভী তখন আপনার খেঙরা লইয়া আমাকে বলিল,- “তুই যেমন ঠাকুর তোর তেমনি করিয়াছেন। আমার মন ভুলাইতে রাঙা ঘাঘরা পড়িয়া সাজ-গোজ করিয়া আসা হইয়াছে; এখন আমি একবার ঝাড়াই।” এই কথা বলিয়া সেও ঘা-কত আমার পিঠে বসাইয়া দিল। কত কিল কত খেঙরা আর সহ্য করিব! আমার পিঠ তো আর পাথরের নয়! আমি সে স্থান হইতে পলায়ন করিলাম। দুর্লভীর ঘর হইতে যখন বাহির হই, তখন এলোকেশী বলিলেন,- “এখনও হইয়াছে কি! চল ঘরে চল! আজি তোর আমি হাড়ীর হাল করিব। খেঙরার চোটে তোর ভূত ছাড়াইব ।” সেই ভয়ে আমি বাড়ী যাইলাম না। আমার খিড়কির বাগানে একগাছ ঠেস দিয়া বিরস বদনে বসিয়া রহিলাম। বসিয়া বসিয়া মা ভগবতীকে ডাকিতে লাগিলাম। আমি বলিলাম,- “মা! আমি তোমার পূজা করিব। তুমি দেখিয়াছ, আমার দালানে তোমার প্রতিমা গড়া হইতেছে। তবে কেন মা আমার উপর রাগ করিয়াছ?” সন্ধ্যা হইল, ক্রমে রাত্রি হইল। বাড়ী যাইতে আমার সাহসী হইল না, গাছে ঠেস দিয়া বসিয়া রহিলাম। মাঝে মাঝে একটু একটু তন্দ্ৰা আসে, কিন্তু তৎক্ষণাৎ ভাঙ্গিয়া যায়। স্বপ্ন দেখি যে, এলোকেশী বুঝি শূৰ্পণখার বেশ ধরিয়া আমার নাক কাটিতে আসিতেছেন। অথবা তাড়কা রাক্ষসী হইয়া আমাকে চকুণ করিতেছেন। প্ৰহারে শরীর জ্বর জ্বর হইয়াছিল। শেষ রাত্রিতে আর বসিয়া থাকিতে পারিলাম না । ভিজা (উপরেই শুইয়া পড়িলাম। একটু নিদ্রা আসিয়াছে, এমন সময় কে যেন আমাকে ডাকিলুৎ১ ধর! বাছা ডমরুধর !” తో অষ্টম পরিচ্ছেদ অমৃত কুণ্ডের জল চমকিত হইয়া আমি উঠিয়া বসিলাম । চক্ষু মুছিতে মুছিতে দেখিলাম সে- স্বয়ং মা দুৰ্গা একখানি চৌকীর উপর আমার সম্মুখে বসিয়া আছেন। এ তোমার দশ-হেতে হরিতাল রঙে গৰ্জ্জন তৈলে ব্যাড়বেড়ে রাঙতা-পরা দুৰ্গা নয়। এ কৈলাস পৰ্ব্বতের আসল মা দুর্গা; সুন্দর পরিচ্ছদে ও বহুমূল্য রত্ন-আভারণে ভূষিত করিয়া কুবের ইহাকে আমার নিকট পঠাইয়াছেন। জোড়হাতে মায়ের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আমি স্তব-স্তুতি করিতে লাগিলাম। মা বলিলেন,- “ডমরুধর ! তুমি বড় অপরাধ করিয়াছ। যে মন্ত্র তোমাকে আমি শিক্ষা দিয়াছিলাম, তাহা ভুলিয়া ও কি উদ্ভট কথা সব বলিয়াছিলে? জিলেট জিলেকি সিলেমেল কলেকিট কিলোকিশ” কি বাছা? এরূপ মন্ত্র বেদে, কোরানে, বাইবেলে কোন স্থানে আমি দেখি নাই। পিড়িং ফিড়িং দুম বলিলেও একদিন কথা থাকিত। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ তোমার এত দুৰ্গতি হইয়াছে। যাহা হউক, তোমাকে আমি ক্ষমা করিয়াছি। এক্ষণ হী কর।” আমি হাঁ করিলাম! দেবী আমার মুখে একটু অমৃত কুণ্ডের জল ঢালিয়া দিলেন। তাঁহাতে ክr8S afraig -iibg gis so! - www.amarboi.comP37°'********