আমায় পাঁড়োজীর আশ্রমে রাখবার জন্যে সেখানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং সেই উদ্দেশ্যেই আমার সঙ্গে সঙ্গেও আসছিলেন। মোহান্তজী বাড়ির কাছে গিয়ে ডাক দুঃখজন লােক বার হয়ে তাঁকে হাসিাথে প্ৰণাম করে বললে—আসনে বাবাজী 石? -ইনি ভাগলপরের বাংগালি বাব-আশ্রমের অতিথি-আসন বাবাজী, আমার বড় সৌভাগ্য-উঠে এসে বসন। বেশ জ্যোৎসনা উঠেছিল। চারিদিকে চেয়ে দেখি বাড়ির উঠানে এবং ঘরের দাওয়ায় বড় বড় জালায় ও হাঁড়িতে কি সব রক্ষিত আছে- কিসের একটা দগধ বের হচ্ছে চারিদিকে। বাড়িতে আমরা একেবারে ভেতরের উঠোনেই গিয়ে হাজির হয়েচি-পাঁড়োজী একাই থাকেন বলে মনে হল, বাড়িতে কোনো মেয়েমান ষ নেই। বাড়িটা কিসের একটা কারখানা। কিসের কারখানা ভালো বঝতে পারছিলাম না। সন্ধ্যার অস্পন্ট জ্যোৎসনালোকে । বাড়ির মধ্যেকার উঠানে আরও অনেক বড় বড় হাঁড়ি-কলসী, সেগলিতেও কি যেন বোঝাই রয়েচে। সেই এক ধরনের উৎকট গন্ধ। কিসের কারখানা এটা ? হঠাৎ আমার মনে হল বে-আইনী মদের চোলাইখানা নয় তো ? কিন্তু মোহান্তজীর মতো সাধপরিষ কি এমন একটা ব্যাপারের সঙ্গে যোগ রাখবেন ? আমাকে চারিদিকে সন্দেহ ও বিসময়ের চোখে চাইতে দেখেই বোধ হয় পাঁড়োজী (ওর নাম শ্ৰীরাম পাঁড়ে) বললে—কি দেখচোন। বাবাজী ? আমি সংকোচের সঙ্গে বললাম-না, ওই কলসীগলোতে কি তাই দেখচি৷ পাঁড়োজী হেসে বললে—কি বলন তো ? -আমি ঠিক বঝতে পারাচিনে-কিসের একটা গন্ধ বার হচ্চে—আচ্ছা, কাছে গিয়ে দেখােন না। বাবজিপ্রত্যেক কলসীতে সাদা সাদা কি জিনিস, দধের মতো। কিন্তু এত দধি বি হবে এখানে, আর সন্ধ্যাবেলার এত দধি কলসীতেই বা কেন? দধি কি রাত্ৰিবেলা খোলা উঠানের মধ্যে ফেলে রাখে ? মোহান্তজীও কৌতুকপণ হয়ে বললেন-কি বাবাজি, কি দেখলেন ? পাঁড়োজী বললে-বাবা, ও-সব কলসীতে ঘোল, বৰঝতে পারলেন না ? এত ঘোলের কলসী একত্র কখনো জীবনে দেখি নি। কি করে বাবতে পারবো ? কিন্তু এত ঘোল এল কোথা থেকে ? ওদের ঘরের দাওয়ায় আমাদের জন্যে জলচৌকি পেতে দিল শ্ৰীীরাম পাঁড়ে। আমরা বসলাম--তারপর মোহালতজীর মাখে ব্যাপারটা শোনা গেল, এটা মাখনের ও ঘিয়ের दादथान्म । দধি অত্যন্ত সস্তা। এসব অঞ্চলে, টাকায় ষোল সেরা পৰ্য্যন্ত বিক্ৰী হতে দেখোঁচি ; মহিষের দািধ বরং একটা দরে বিক্ৰী হয়, কারণ ঘি করবার জন্যে মহিষের দািধ গোয়ালারা কেনে, কিন্তু গোেরর দধের দাম নেই। এখানে-গোেরর দধের মাখন ও ঘি করবার রেওয়াজ নেই। এখানে। শ্ৰীীরাম পাঁড়ের বাড়ি ছাপরা জেলায়। সে এক মাখন-তোলা কল নিয়ে এসে এই মাঠেরই মধ্যে প্রথম একখানা চালাঘর তুলে বসে-সে। আজ এগারো বছর পকেবর কথা । এই এগারো বছরের মধ্যে শ্ৰীীরামের ব্যবসা এত বড় হয়ে উঠেছে যে ওকে মাঠের মধ্যে অনেকখানি জমি নিয়ে বড় বড় দখানা আটচালা ঘর, আর ছোট ছোট চালাঘর