পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নতুন করে শিখতে হবে। যাই হোক, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অবস্থার সঙ্গে লড়াই করে তোমরা চলতে পারবে এবং দেশবাসী তোমাদের সুদৃঢ় স্কন্ধে যে দায়িত্ব অর্পণ করেছে তোমরা তার মর্য্যাদা রাখবে। সেনাদলকে গড়ে তোল। একথাও মনে রেখ, বৃটিশরা যে এত জায়গায় পরাজিত হয়েছে, তার কারণ তাদের সেনানীদের অযোগ্যতা। মনে রেখ যে, তোমাদের মধ্য থেকেই স্বাধীন-ভারতের ভাবী সেনানায়কদল গড়ে উঠবে। তোমাদের সকলকে আমি এই কথাই বলতে চাই, এই যুদ্ধকালে তোমরা যে অভিজ্ঞতা লাভ করবে, তা আমাদের ভবিষ্যৎ সেনাদলকে অনুপ্রাণিত করবে। যে সেনাদলের পক্ষে বীরত্ব নির্ভীকতা অপরাজেয়তা সম্বন্ধে নিজেদের গর্ব করার মত অতীত স্মৃতি নেই, তারা কোন পরাক্রান্ত শক্তির সঙ্গে সংগ্রামে টিকতে পারে না।

 সতীর্থগণ, তোমরা স্বেচ্ছায় এ ব্রত নিয়েছ। মানব-জীবনে এ ব্রত মহত্তম। এ ব্রত উদ্‌যাপনের জন্যে কোন ত্যাগ-স্বীকারই খুব বেশী নয়; নিজের জীবন পর্য্যন্ত তুচ্ছ। তোমরাই আজ ভারতের জাতীয় মর্য্যাদার রক্ষক এবং ভারতের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত্ত প্রতীক। এমন ভাবে চলবে যেন দেশবাসী সর্ব্বান্তঃকরণে তোমাদের আশীর্ব্বাদ করতে পারে এবং জাতির ভবিষ্যৎ বংশধররা তোমাদের জন্যে গর্ব্ববোধ করে।

 আজ আমার জীবনে সব চেয়ে বেশী গর্ব্বের দিন—একথা আমি বলেছি। পরাধীন জাতির পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম সৈনিক হওয়ার চেয়ে বড় সম্মান এবং গৌরবের বিষয় অন্য কিছুই নাই। কিন্তু এই সম্মানের সঙ্গে সমপরিমাণ দায়িত্বও রয়েছে এবং সে দায়িত্ব সম্বন্ধে আমি সম্পূর্ণ সচেতন। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করছি—আলোকে এবং অন্ধকারে, দুঃখে এবং সুখে, পরাজয়ে এবং বিজয়ে আমি সর্ব্বদা তোমাদের পাশে পাশে থাকব। বর্ত্তমানে তোমাদের আমি ক্ষুধা-তৃষ্ণা, দুঃখ-কষ্ট, দুর্গম অভিযান এবং মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু দিতে অসমর্থ। কিন্তু