পাতা:দীনবন্ধু গ্রন্থাবলী.djvu/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-দৰ্পণ ه/ما রঞ্জনত্রব্য হিসাবে নীলের প্রয়োগ খুব ব্যাপক, ইহা পৃথিবীর সর্বত্র ব্যবহৃত হইয়া থাকে। অধুনা ইহা রাসায়নিক গবেষণাগারে প্রচুর পরিমাণে প্রস্তুত হয়। কিন্তু এই বৈজ্ঞানিক প্রণালী আবিষ্কৃত হইবার পূৰ্ব্বে নীলনামীয় একরূপ গাছ হইতে এই রঙ সংগৃহীত হইত। ভারতবর্ষে নীলের চাষ বহু পুরাতন, ইণ্ডিগো নামেই তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ( ১৬০০ খ্ৰীষ্টাব্দ ) গোড়া হইতেই নীলের কারবার করিতেন । ১৭৭৯ খ্ৰীষ্টাব্দে উক্ত কোম্পানি সাধারণভাবে সকলকেই নীল চাষের অধিকার দান করেন । বাংলা দেশ ও বিহারের কোনও কোনও অঞ্চল এই নীল গাছের চাষের অত্যন্ত উপযোগী ছিল । এই ব্যবসায় এতই লাভজনক ছিল যে, কোম্পানি অনুমতি দেওয়া মাত্রই শ্বেতাঙ্গ বণিকসম্প্রদায় বাংলা দেশে এবং বিহারে এই ব্যবসায় আরস্ত করেন । প্রথমে দেশীয় জমিদারদিগকে প্রলুব্ধ করিয়া তাহাদের জমিতে র্তাহাদের প্রজাদের দ্বারাই এই চাষ চলিত। সাহেবরা সৰ্ব্বত্র নীলকুঠি স্থাপন করিয়া উক্ত জমিদার ও জোতদারগণের নিকট হইতে নীলের ফসল খরিদ করিয়া, এই সকল স্থানে রঞ্জনদ্রিব্য নিষ্কাষণ করিতেন । ক্রমে ক্রমে অধিকতর লোভে এবং বিপুল সম্পত্তির বলে এই সাহেবরা নিজেরাই জমিদারি খরিদ করিয়া নীলের চাষ করিতে থাকেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের ও অক্ষা জমিদারের প্রজাদের দাদন দিয়াও চাষ করিতে বাধ্য করেন। শেষ পর্য্যস্ত ইহাদের লোভ এতই বাড়িয়া যায় যে, অর্থ ও সামর্থ্যের বলে ইহার ইচ্ছামত প্রজাদের উৎকৃষ্ট জমিতে মার্ক দিয়া ("দাগ মারিয়া”) তাহাতেই নীলের চাষ করাইতেন, চাষীরা একান্ত প্রয়োজনীয় আহাৰ্য্য শস্য উৎপাদনের অধিকার, সময় ও সুযোগ পাইত না । দুই এক জন প্রজ ইহার প্রতিবাদ