পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

হইল। এই জন্যই তিনি নিজপুত্রের জন্মোৎসবকার্য্য উপলক্ষ্য করিয়া আনারকে সেই বহুমূল্য রত্নহার উপহার দিয়াছিলেন।

 মাতা যে অত শীঘ্র সহসা ইহলোক হইতে চলিয়া যাইবেন, নবাব সুজা বেগ তাহা আদৌ ভাবেন নাই। আনার উন্নিসা তাঁহার প্রতিবাসী কন্যা। বহুবার তিনি আনারকে দেখিবার ও তাহার সঙ্গে কথা কহিবার অবসর পাইয়াছেন। কিন্তু আনারের সুবিমল সৌন্দর্য্য কখনও তাঁহার পাষাণের ন্যায় কঠিন প্রাণে, তখন একটী দাগ পর্যন্ত কাটিতে পারে নাই।

 কিন্তু সেই উৎসব রাত্রে বিচিত্র পরিচ্ছদভূষিতা, অপূর্ব্ব রূপশালিনী আনারকে তিনি নুতন চক্ষে দেখিলেন। আনারের লোকবিশ্রুত সৌন্দর্য্য, যেন সেই দিন রাত্রে তাঁহার মনের ভিতর সিঁদ কাটিল।

 সুজাবেগ মনে মনে ভাবিলেন,—“অনেক উচ্চপদস্থ ওমরাহের ঐশ্বর্য্যময়ী গরবিনী কন্যার অপেক্ষা, যেন এই আনার উন্নিসা রূপে গুণে, তাঁহার ঘরণী হইবার সর্ব্বাংশে যোগ্যা। এই জন্যই সুজাবেগ আনারের অভিমত জানিবার জন্য খুবই উৎসুক হইয়া তাহাকে পূর্ব্বোক্ত সেই পত্রখানি লিখিয়াছিলেন। পাঠক এ পত্রখানির কথা জানেন।

 আনারের পত্রের উত্তর আসিতে দুই এক দিন বিলম্ব হইতে পারে। কেন না —এ সম্বন্ধে তাহার কোন স্বাধীনতাই নাই। সে সম্পুর্ণরূপে তাহার পিতার ইচ্ছার অধীন। এইরূপ একটা অসহিষ্ণুতাময় চিন্তায় অধীর হইয়া, সুজাবেগ আনারের পিতা

২৯