পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

ফুৎকারে নিভাইয়া দিবার চেষ্টা করিতেছিল। কিন্তু পারিয়াছিল কি না, তাহা আমরা ঠিক বলিতে পারি না।

 রূপজ মোহ ঠিক যেন ধাতু পাত্রে কলঙ্কের দাগের মত। বিশেষ কোন কারণে প্রাণে আঘাত না লাগিলে, মনটাকে এ কলঙ্ক হইতে ভালরূপে ঘষিয়া মাজিয়া না লইলে, এ মোহ সহজে অপসারিত হয় না। অর্থাৎ সোজা কথায় যাহাকে দাগা পাওয়া বলে, সেইরূপ কোন কিছু সাংঘাতিক ব্যাপার একটা হওয়া চাই।

 নির্ব্বাণোন্মুখ দীপে তৈলদান করিলে, তাহা যেমন সহসা জ্বলিয়া উঠে, বা আরও কিছুক্ষণ জ্বলে, নবাব সুজা বেগের অবস্থাটাও এখন ঠিক সেইরূপ। তিনি বাহারবানুকে সম্মুখে দেখিলে, কাছে পাইলে, যেন হাতে স্বর্গ পাইতেন। আবার কিয়ৎক্ষণ তাহার সাহচর্য্যে থাকিলেই যেন আনন্দের পরিবর্ত্তে একটা বিরক্তি আসিয়া দেখা দিত।

 আর একটী গৃহ্য ব্যাপার, যাহাতে এই বাহারবানু আর নবাব সুজা বেগ, অবিচ্ছেদ ভাবে জড়িত ছিলেন। সেটা আমরা বলিব না ভাবিয়াছিলাম। কিন্তু আমাদের এই উপন্যাসের সহিত তাহার একটু সম্বন্ধ আছে বলিয়া, তাহা বলিতে হইল।

 তখন আগরা সহরে “প্রমারা” খেলার খুবই প্রচলন ছিল। ইহার প্রতিকারের জন্য সম্রাটের আইন কানুন অবশ্য খুবই কঠোর ছিল। কিন্তু সহরের অতি নিভৃত গুপ্ত স্থানে, এমনভাবে এই সব সর্ব্বনেশে খেলা চলিত যে, অতি সুচতুর রাজকর্মচারীরাও কোনমতে তাহার সন্ধান পর্যন্ত পাইতেন না। আবার তাঁহাদের

৪৬