পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বলিতে সাহস করিতেন না। এইরূপে আশায় আশায় থাকিয়া, তিনি সেই সংকট রোগে দেহত্যাগ করিলেন।

 তারপর নবাব সুজা বেগের মাতা, তাঁহার একমাত্র পুত্রের সহিত, আনার উন্নিসার বিবাহ প্রস্তাব করিয়া, আত্মীয়তা আরম্ভ করিলেন। আর তিনিও তাঁহার মনের বাসনা পরিতৃপ্ত করিবার পূর্ব্বেই পরলোকের পথিক হইলেন।

 নবাব সুজা বেগের উচ্ছৃঙ্খল চরিত্রের কথা যে আনার উন্নিসা না জানিত, তাহা নয়। তাঁহার সমবয়স্কা প্রতিবেশিনীরা, পাছে আনার—বড়লোকের ঘরে পড়ে, এই হিংসায় জ্বলিয়া, আত্মীয়তার ভাণ দেখাইয়া, নবাব সুজা বেগের বিরূদ্ধে অনেক কথাই বলিত। অবশ্য সে সব কথা একেবারে ভিত্তিহীন নয়। এ সম্বন্ধে বাকী যে টুকু ছিল, বাহারবানু তাহাতে পূর্ণাহুতি দিয়া গিয়াছে। এই সব কারণে সে বাহিরে সুজা বেগকে তাঁহার ঊন্নত অবস্থার অনুরূপ সন্মান দেখাইলেও, অন্তরে অন্তরে তাহাকে সে যেন একটু অশ্রদ্ধা করিত।

 জুমেলি সংসারের কাজে ভারি ব্যস্ত। আনারউন্নিসা, তাহার কক্ষ মধ্যে বসিয়া এক দৃষ্টে আকাশের দিকে চাহিয়া, উদাস ভাবে কত কি ভাবিতেছে।

 আনার উন্নিস। তখন মনে মনে ভাবিতেছিল—“মহা সংঙ্কটে পড়িয়াছি যে আমি। বিশ্বাস করিয়া কাহারও নিকট মনোভাব প্রকাশ করিতে পারি না। ভয় হয়, পাছে কেউ উপহাস করে। একদিকে ঐশ্বর্য্য— অপর দিকে অভাব অনাটন। একদিকে

৬৮