পাতা:দ্বিতীয় চরিতাষ্টক - কালীময় ঘটক.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কবি মদনমোহন তর্কালঙ্কার।
১৮৫

দেখিলেন যে, ভারতকে হারাইতে পারেন নাই। তদবধি বাঙ্গালা কবিতা লেখা প্রায় ছাড়িয়া দেন। বোধ হয়, এরূপ ক্ষণিক ইচ্ছার বশবর্ত্তী হইয়া কবিতা গ্রন্থনে নিবৃত্ত না হইলে, তিনি ভবিষ্যতে উহাতে কৃতকার্য্য হইতে পারিতেন। যেহেতু বাল্যকালেই তাঁহার ঐ শক্তির স্ফ‌ুর্ত্তি হইয়াছিল। যাহা হউক, ১২৫০ সালে (১৮৪২ খৃঃ) তিনি পাঠ সাঙ্গ করিয়া কলেজ ছাড়িলেন।

 কালেজ ছাড়িয়া প্রথমে তিনি কলিকাতার বাঙ্গালা পাঠশালায় ১৫৲ টাকা বেতনে পণ্ডিত হয়েন। পরে বারাসতের গবর্ণমেণ্ট ট্রেবর বিদ্যালয়ের প্রধান পণ্ডিতের পদে ২৫৲ টাকা বেতনে নিযুক্ত হন। তথায় এক বৎসর মাত্র কাজ করিয়া ফোর্ট উইলিয়ম্ কালেজের অধ্যাপকের পদ পাইলেন। এই পদের বেতন ৪০৲ টাকা ছিল। তথায় দুই বৎসর প্রশংসার সহিত কর্ম্ম করিয়াছিলেন। তাঁহার সাহেবছাত্রেরা তাঁহাকে যথেষ্ট ভক্তি করিতেন। যে সকল সিবিলিয়ান্ সাহেব এদেশে কর্ম্ম করিতে আসেন, তাঁহারা ঐ কালেজে বাঙ্গালা শিক্ষা করেন। এই সময়ে কৃষ্ণনগর কলেজ স্থাপিত হয়। তর্কালঙ্কার ৫০৲ টাকা বেতনে তাহার প্রধান পণ্ডিতের পদ পান। ঐ পদে এক বৎসর মাত্র কর্ম করিয়া সংস্কৃত কলেজের সাহিত্য শাস্ত্রাধ্যপিকের পদে ৯০৲ টাকা বেতনে নিযুক্ত হইলেন। এত দিনে তাঁহার গুণের গৌরব ও পরিশ্রমের কতক পুরস্কার হইল।