পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
ধুস্তুরী মায়া

মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা প্রয়োগ করে পঞ্চী আর জটিরামের সূক্ষ্মশরীর আটকে ফেললুম। তার পর রমাকান্তকে বললুম, তুই ধড় দুটো কাঁধে করে আশ্রমে নিয়ে চল, মুণ্ডু দুটো আমি নিয়ে যাচ্ছি। আশ্রমে এসে রমাকান্ত আমার উপদেশ মত ধড় এক জায়গায় আর মণ্ডু আর এক জায়গায় শুইয়ে দিলে। খণ্ডযোজনের আগে পর্যন্ত এই রকম তফাত রাখাই তন্ত্রোক্ত পদ্ধতি।

 হরিশ চাকলাদার প্রশ্ন করলেন, সূক্ষ্মশরীরও কি দু ভাগ হয়েছিল? মুণ্ডু আর ধড় দুটোই আলাদা হয়ে বেঁচে রইল কি করে?

 যদু গড়গড়ি বললেন, তোমরা দেখছি কিছুই জান না। সূক্ষ্মশরীর ভাগ হয় না, নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি। তার অ্যানাটমি অন্য রকম। কতকটা অ্যামিবার মতন, কিন্তু ঢের বেশী ইলাস্টিক। ধড় আর মুণ্ডু তফাতে থাকলেও সূক্ষ্মশরীর চিটে গুড়ের মতন বেড়ে গিয়ে দুটোতেই ভর করতে পারে। তার পর বিঘোর বাবা যা বলছিলেন শোন।—

 রমাকান্ত আবার আমার পায়ে পড়ে বললে, দোহাই বাবাঠাকুব, ফাঁসি যেতে পারব না, আমাকে বাঁচান। আমি বললুম, তুই এক্ষনি তোর বাড়ি গিয়ে সব রক্ত ধুয়ে সাফ করে ফেলবি, তোর রাম-দা গঙ্গায় ফেলে দিবি, তার পর ত্রিবেণীতে গিয়ে এই টেলিগ্রামটা পাঠাবি, তার পর গায়েব হয়ে থাকবি। এক বৎসর পরে গাঁয়ে ফিরতে পারিস। রমাকান্ত বললে, কিন্তু লাশের গতি কি করবেন? পুলিস টের পেলেই তদারক করতে আসবে, আপনাকেই আসামী বলে চালান দেবে। আমি বললুম, তোকে তা ভাবতে হবে না, যা বলেছি তাই করবি। রমাকান্ত যে আজ্ঞে বলে চলে গেল। আমার সেই টেলিগ্রাম পেয়ে তুমি এসেছ। এখন আর দেরি নয়, রাত আটটায়