পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রেবতীর পতিলাভ
৬৫

উত্তরীয়, গলায় আজানুলম্বিত বনমালা। অতি সুশ্রী সঠাম কিশোর বিগ্রহ। রেবতী আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করলেন, কে তুমি, মানুষ না পুতুল?

 সহাস্যে নমস্কার করে সেই অদ্ভুত মূর্তিটি উত্তর দিলে, আমি আপনার আজ্ঞাবহ কিংকর।

 —তোমার নাম কি, পরিচয় কি? কিজন্য এখানে এসেছ?

 —আমার নাম কৃষ্ণ, আমি বসুদেবের পুত্র, বলদেবের অনুজ। আপনি আমার ভাবী জ্যেষ্ঠভ্রাতৃজায়ী, পূজনীয়া বধূঠাকুরাণী, তাই প্রণাম করতে এসেছি।

 অবজ্ঞা ও কৌতুক মিশ্রিত স্বরে রেবতী বললেন, আমাকে দেখে ভয় করছে না? শুনেছি তোমার দাদা নাকি একটি অবতার, নারায়ণের অংশে জন্মেছেন। তুমিও অবতার নাকি?

 কৃষ্ণ বললেন, আমি অত ভাগ্যবান নই, দশ অবতারের তালিকায় আমার নাম ওঠে নি। এখন আমার বার্তা শুনুন। দেবর্ষি নারদ আমার পিতার কাছে গিয়ে আপনার সঙ্গে বলদেবের বিবাহের প্রস্তাব করেছেন। পিতা পরমানন্দে সম্মত হয়েছেন। কালই বিবাহ। আমার অগ্রজ এখনই আপনার সঙ্গে আলাপ করতে আসবেন, সেই সুসংবাদ দেবার জন্য আমি তাঁর অগ্রদূত হয়ে এসেছি।

 রেবতী প্রশ্ন করলেন, সম্পর্কে তুমি আমার কে হবে? শ্যালক?

 কলহাস্য করে কৃষ্ণ বললেন, আপনি দেখছি নিতান্ত সেকেলে, কাকে কি বলতে হয় তাও জানেন না। পত্নীর ভ্রাতাই শ্যালক, পতির ভ্রাতাকে তা বলতে নেই। আমি আপনার দেবর। এই যে, দাদা এসে গেছেন।

 রেবতী দেখলেন, তাঁর ভাবী স্বামী কৃষ্ণের চাইতে ঈষৎ লম্বা আর মোটা, রজতগিরিতুল্য শুভ্র কান্তি, চন্দনচর্চিত প্রশস্ত বক্ষ,