পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

 এ দিকে প্রভাত আর কৃষ্ণনাথের গৃহে যায় না;—বড় লজ্জা করে। বিনোদবিহারী প্রায়ই আইসে, কিন্তু সে যায় না। বিনোদবিহারী বিদ্রূপ করিয়া বলে, “বিবাহের কথা বলিয়া তোমাকে যে একেবারে হারাইতে বসিলাম! এখন কোথায় কি তাহার স্থির নাই, কিন্তু তুমি আর আমাদের বাড়ী মাড়াও না। এ যে বিষম লজ্জা!” প্রভাত উত্তর করে না,মুখ নত করিয়া থাকে।

 আপনার কক্ষে বসিয়া ভাবিতে ভাবিতে প্রভাত যদি সম্মুখের অট্টালিকার দিকে চাহে, তবে তখনই দৃষ্টি ফিরাইয়া লয়। লজ্জা আপনার মনে। তবুও তাহার অজ্ঞাতে দৃষ্টি কেবল সেই দিকে যায়!

 বিনোদবিহারী দেখিল, তাহার বিদ্রূপবাণ প্রভাতের লজ্জার বর্ম্ম ভেদ করিতে পারিল না! তখন সে একদিন সন্ধ্যায় তাহাকে আহারের নিমন্ত্রণ করিল। প্রভাত অসুস্থতার ওজর করিল। বিনোদবিহারী হাসিয়া বলিল, “আমি দেখিতেছি, তুমি বেশ সুস্থ আছ। তোমার রোগ কেবল লজ্জা।” তাহার গমনে বিলম্ব ঘটিলে বিনোদবিহারী স্বয়ং পুনরায় আসিল। প্রভাত বলিল, “আমাকে ক্ষমা করুন। শরীর ভাল নাই।” বিনোদবিহারী বলিল, “ও বাঁধা ওজর আমি শুনিব না। তুমি যদি না যাও, তবে আমি আর তোমার এখানে আসিব না।” ইহার উপর আর কথা চলে না। প্রভাত যাইবার উদ্যোগ করিল। কিন্তু যেরূপ সাধারণ বেশে

৪৩