পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ

তাম্রকূটের বহুল প্রচারের পূর্ব্বে বাঙ্গালার লোক প্রণম্যদিগের সম্মুখে ধূমপান করিত না।

 হুঁকা নামাইয়া নবীনচন্দ্র বলিলেন, “এখনও মাছ আইসে নাই, তাই আমার উপর আর শ্যামের মা'র উপর রাগ হইয়াছে।”

 শিবচন্দ্র হাসিয়া কমলকে বলিলেন, “কেন, মা, আমরা ত নিত্য গৃহে আহার করি, আমাদের জন্য ত কোন দিন এমন আয়োজন হয় না।” তাহার পর ভ্রাতাকে বলিলেন, “ও দিকে বাড়ীর ভিতরে দিদি বড় বধূকে তিরস্কার করিয়াছেন। দিদিকে ঘরের সব তরকারী কুটিতে উদ্যতা দেখিয়া তিনি বলিয়াছিলেন, ‘ঠাকুরঝি, হাটের এখনও দুই দিন বিলম্ব আছে, আজই সব তরকারী কুটিবে?' ইহাতে দিদি বড় রাগ করিয়াছেন।”

 নবীনচন্দ্র হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করিলেন, “দিদি কি বলিলেন?”

 “বলিলেন, ‘সাতটা নহে—পাঁচটা নহে—একটা ছেলে। কত দিন পরে বাড়ী আসিতেছে;—আজ যদি দুইটার স্থানে চারিটা ব্যঞ্জন না করিব, তবে কবে করিব? তরকারী কি পরলোকে সঙ্গে যাইবে? হাটের বিলম্বের ভাবনা আমি ভাবিব; তুমি রাঁধিতে যাও।’ আজ বৃহৎ আয়োজন।”

 দুই ভ্রাতা হাসিতে লাগিলেন।

 এই সময় কমল কর্তৃক দারুণ অভিযোগে অভিযুক্তা শ্যামের মা একখানি জলচৌকি ও একবাটী সর্ষপ-তৈল দিয়া গেল।