বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পেটিওটিজম ২১১ চেষ্টাটা বাতুলতা মাত্র। ভারতবাসী যখন স্বরাজ লাভ করবে, তখন ভারতবর্ষের কোনও প্রদেশই তার শিক্ষা-দীক্ষার উপর অপর কোনও প্ৰদেশকে হস্তক্ষেপ করতে দেবে না । প্ৰতি স্ববশ সজ্ঞান জাতির একটান-একটা বিশেষ জাতীয় আদর্শ থাকে, এবং সেই আদর্শ অনুসারেই . সে জাতি তার শিক্ষার ব্যবস্থা করে । যার নিজত্ব বলে কোনও জিনিস নেই, অথবা নিজত্ব যে রক্ষা করতে বিকশিত করতে না চায়, তার পক্ষে স্বাধীনতার কোন প্রয়োজন নেই ; শুধু তাই নয়, তার কাছে উক্ত শব্দের । কোন অর্থও নেই। স্বত্বসাব্যস্ত করবার জন্যই ত স্বাধীনতার আবশ্যক । আমার শেষ কথা এই যে, আমাদের পুথিপড়া মনের সঙ্গেও বাকী ভারতবর্ষের পুথিপড়া মনের কিঞ্চিৎ প্ৰভেদ আছে। সুতরাং আমাদের পলিটিক্যাল মন ও অন্য প্রদেশের পলিটিক্যাল মনের ঠিক অনুরূপ নয়। মনে রেখো, মানুষের পলিটিক্যালামন তার সমগ্ৰ মনের বহিভূত নয়, তার সঙ্গে নিঃসম্পকিতও নয় । অবশ্য এক দলের কংগ্রেস-ওয়ালা আছেন। র্যারা এ কথা মানেন না ; যদি মানতেন, তা’হলে তাদের দলে টিকিওয়ালাডিমোক্র্যাট-রূপ অদ্ভুত জীবের এতটা প্রাধান্য হত না। ডিমোক্রাটিক স্বরাজ্য লাভ করতে হলে আমাদের মনের যে বদল আবশ্যক, এ জ্ঞান আমাদের যুবকশ্রেণীর মনে যে প্রবেশ করেছে তার পরিচয় আমি পাচজনের সঙ্গে কথায়বাৰ্ত্তায় নিত্যই পাই। মানুষকে মানুষ জ্ঞান করব না, শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে দেশের অধিকাংশ লোককে দাস ও স্ত্রীলোককে দাসী করে রাখব, অথচ পৃথিবীর ডিমোক্রাটিক জাতিদের মত রাজনৈতিক জগতে স্বরাট হব, এরূপ মনোভাব যে যুগপৎ লজ্জাকর ও হাস্যকর, এ ধারণা এ যুগের বহু বাঙালীর মনে জন্মেছে।