বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২) নানা চৰ্চা হিমালয় হতে কন্যাকুমারিকা যতদূর, ততদূর। এর থেকে দেখতে পাচ্ছ যে, এসিয়ার উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথকে এক দেশ বলা কতদূর সঙ্গত । এই কারণে এসিয়ার উত্তরাখণ্ডকে একটি উপমহাদেশ বলা হয় আর তার দক্ষিণাপথের পশ্চিম ভাগকে দ্বিতীয়, পূর্ব ভাগকে তৃতীয়, তার মধ্য ভাগকে চতুর্থ উপমহাদেশ বলা যায়। এই মধ্যদেশই ভারতবর্ষ। ভূমধ্য পৰ্ব্বত থেকে এই চারটি উপমহাদেশ ঢাল হয়ে সমুদ্রের দিকে নেমে এসেছে। ফলে উত্তর ভাগের সকল নদী উত্তরবাহিনী, ও তারা সব গিয়ে পড়ে Arctic সমুদ্রে ; পশ্চিম ভাগের জল গড়িয়ে পড়ে ভূমধ্য সাগরে, পূর্ব ভাগের জল প্ৰশান্ত মহাসাগরে ও মধ্যদেশের জল ভারত মহাসাগরে । মধ্য এসিয়া পৰ্বতময়। আর এ পর্ব্বত অৰ্দ্ধেক এসিয়া জুড়ে বসে আছে। আর তার চারপাশের চার ভাগের প্রকৃতি ও চরিত্র সম্পূর্ণ বিভিন্ন। উত্তর দেশ অর্থাৎ Siberia সমতল ভূমি কিন্তু জলবায়ুর গুণে মানুষের বাসের পক্ষে অনুকুল নয়। পশ্চিম একে পাহাড় উপরন্তু নির্জলা দেশ। সে দেশের জমিতে ফসল একরকম হয় না বললেই চলে। ইরাণ তুরাণের অধিকাংশ লোক গৃহস্থ নয়—তারা অন্নের সন্ধানে তাঁবু ঘাড়ে করে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ায় । বাকী দুটি ভূভাগ, ভারতবর্ষ ও চীনদেশ মানুষের বাসের পক্ষে সম্পূর্ণ উপযোগী। এ দুটি দেশ মুখ্যতঃ সমতল ভূমি, আর সে ভূমি কর্ষণ করে অন্নবস্ত্ৰ দুই লাভ করা যায় ; অতএব এ দুই দেশের লোকই গৃহস্থ হয়েছে। আর শাস্ত্ৰে বলে মানুষের সকল আশ্রম গাৰ্হস্থ্য আশ্রমেরই বিকল্প মাত্ৰ ।