বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাভারত ও গীতা GS অবসর আছে। গীতার অন্তরে নানারূপ ধাতু আছে। কোন ভাষ্যকারই তাকে ব্যাখ্যার বলে তার মনোমত এক ধাতুতে পরিণত করতে কৃতকাৰ্য্য হবেন না-তা সে ধাতু, জ্ঞানের স্বর্ণ ই হোক আর কৰ্ম্মের লৌহই হোক। পূৰ্ব্বাচায্যের প্রধানতঃ গীতাভাষ্যে জ্ঞান-ভক্তি-মার্গই অবলম্বন করেছিলেন— গীতার ধৰ্ম্ম যে মুখ্যতঃ সন্ন্যাসের ধৰ্ম্ম নয়, ভগবৎ-গীত যে অবধূত-গীত ও অষ্টাবক্ৰ-গীতার জ্যেষ্ঠ-সহােদর নয়, এ কথা কিন্তু আজ আমরা জোর করে বলতে পারি। গীতার মতকে কৰ্ম্মযোগ বলবার আমাদের অবাধ অধিকার আছে । আর যুগ ধৰ্ম্মানুসারে আমরা গীত নিংড়ে সেই মতই বার করবার চেষ্টা করব। আর এ প্ৰযত্ন মহাত্মা তিলকের তুল্য। আর কে করতে পারেন ? এ যুগের তিনিই যে হচ্ছেন অদ্বিতীয় কৰ্ম্মযোগী, এ সত্য আর শিক্ষিত অশিক্ষিত কোন ভারতবাসীর নিকট অবিদিত ? এই গীতাভাষ্যও মহাত্মা তিলকের কৰ্ম্মযোগের অদ্ভুত ক্রিয়া। জ্ঞানের তরফ থেকে শঙ্করের ভাষ্য যেমন একমেবাদ্বিতীয়ং, কৰ্ম্মের তরফ থেকে মহাত্মা তিলকের ভাষ্যও, আমার বিশ্বাস, তেমনি একমেবাদ্বিতীয়ং হয়ে থাকবে । 8 গীতা কৰ্ম্মমার্গের, জ্ঞান-মার্গের কি ভক্তি-মার্গের শাস্ত্ৰ, এ তর্ক হচ্ছে এ দেশের ও সেকালের । কিন্তু এই গ্ৰন্থ নিয়ে এ যুগে এক নূতন তর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সে তর্কটা যে কি তা মহাত্মা তিলকের ভাষাতেই বিবৃত করছি ।