পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

অনেকগুলি গর্ত্ত ছিল—তাহার মধ্যে একাধিক বিড়াল আসিয়া আশ্রয় লইত। মেজের উপর কোন কাঠের আবরণ ছিল না। মাটির উপরেই সকল কাজ-কর্ম্ম চলিত। মেজের মধ্যস্থলে একটা বড় গর্ত্ত করা হইয়াছিল। শীতকালে তাহার মধ্যে শকরকন্দ আলু রাখিয়া একটা কাঠের তক্‌তা দিয়া ঢাকা হইত। এই আলুগুদামের কথা আমার বেশ মনে আছে। এখান হইতে নাড়াচাড়া করিবার সময় দুই চারিটা আলু আমার হস্তগত হইত। সেইগুলি পরে নির্জ্জনে পুড়াইয়া খাইতাম।

 রন্ধনাদির সরঞ্জাম অতি কদর্য্য রকমেরই ছিল। ‘ষ্টোভ’ দেওয়া হইত না। খোলা উননে রান্না করিতে হইত। ফলতঃ শীতকালে যেমন ঠাণ্ডা বাতাসের দৌরাত্ম্যে প্রাণে বাঁচা কঠিন হইত, তেমনি গ্রীষ্মকালে এই খোলা উননের উত্তাপ আমাদের জীবনধারণ অসম্ভব করিয়া তুলিত।

 আমার বাল্যজীবনে এবং অন্যান্য হাজার হাজার গোলামের বাল্যজীবনে কোন প্রভেদই ছিল না। আমাকে এবং আমার ভাই ও ভগ্নীকে দিবাভাগে কখনই মাতা দেখিতে শুনিতে সময় পাইতেন না। খুব সকালে সরকারী কাজে হাত দিবার পূর্ব্বে এবং রাত্রে সকল কাজ সারিবার পর আমার মাতা আমাদিগের জন্য কিছু সময় করিয়া লইতেন। মনে পড়ে কোন কোন দিন রাত্রে আমার মাতা আমাদিগকে জাগাইয়া কিছু মাংস খাওয়াইতেন। কোথায় যে তিনি তাহা পাইতেন কিছুই জানিতাম না। অবশ্য আমার মনিবেরই পশুশালা হইতে জন্তুটি