পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী
৮৯

কাম জয়ের প্রধান উপায় সকল স্ত্রীলোকের মধ্যে মাতৃরূপ দেখা ও মাতৃভাব আরোপ করা এবং স্ত্রীমূর্ত্তিতে। যেমন দুর্গা, কালী) ভগবানের চিন্তা করা। স্ত্রীমূর্ত্তিতে ভগবানকে বা গুরুর চিন্তা করিলে মানুষ ক্রমশঃ সকল স্ত্রীলোকের মধ্যে ভগবানকে দেখিতে শিখে; সে অবস্থায় পৌঁছিলে মানুষ নিষ্কাম হইয়া যায়। ব্যবহারিক জীবনে সকল স্ত্রীলোককে “মা” বলিয়া ভাবিতে ভাবিতে মন ক্রমশঃ পবিত্র ও শুদ্ধ হয়।

 ভক্তি ও প্রেমের দ্বারা মানুষ নিঃস্বার্থ হইয়া পড়ে। মানুষের মন ব্যক্তি বা আদর্শের প্রতি যেমন ভালবাসা বা ভক্তি বাড়ে তেমন স্বার্থপরতাও কমে। ...ভালবাসিতে বাসিতে মনটা ক্রমশঃ সঙ্কীর্ণতা ছাড়াইয়া বিশ্বের মধ্যে লীন হইতে পারে।....মানুষ যাহা চিন্তা করে ঠিক সেইরূপ সে হইয়া পড়ে। “যাদৃশী ভাবনা সস্য সিদ্ধিভবতি তাদৃশী”॥ নিজেকে “দুর্ব্বল ও পাপী” ভাবিলে মানুষ দুর্ব্বল ও ও পাপী এবং “শক্তিমান ও পবিত্র” ভাবিলে মানুষ শক্তিমান ও পবিত্র হইয়া উঠে।

 ভয় জয় করার উপায় শক্তিসাধনা। দুর্গা, কালী প্রভৃতি মূর্ত্তি শক্তির রূপ বিশেষ। ইহাদের নিকট শক্তি প্রার্থনা করিলে এবং তাঁহাদের চরণে মনের দুর্ব্বলতা ও মলিনতা বলিস্বরূপ প্রদান করিলে মানুষ শক্তিলাভ করে। আমাদের মধ্যে অনন্ত শক্তি নিহিত আছে সেই শক্তির বোধন করিতে হইবে। পূজার উদ্দেশ্য মনের শক্তির বোধন করা। প্রত্যহ পঞ্চেন্দ্রিয় ও সকল রিপুকে তাঁহার চরণে নিবেদন করিবে। পঞ্চপ্রদীপ অর্থ পঞ্চেন্দ্রিয়। ......বলির অর্থ রিপু বলি —কারণ ছাগই কামের রূপবিশেষ। সাধনার কাজ একদিকে রিপু ধ্বংস করা, অপরদিকে সদ‍্বৃত্তির অনুশীলন