বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এবং মন্ত্রীমণ্ডলীর নিকট একখানি স্মরণীয় পত্র প্রেরণ করেন। সেই পত্রে তিনি লিখেছিলেন—

 আমার নিজের সম্বন্ধে আমার যা কিছু বক্তব্য এখানে বলবো এবং কেন আমার জীবনের চরম পথে পা বাড়াচ্ছি তারও যুক্তিগুলো কাগজে কলমে একে একে প্রকাশ করবো।

 আপনাদের কাছে সুব্যবহার প্রত্যাশা করবার আর কোন আশা নাই। তাই আমি দুটি অনুরোধ জানাচ্ছি—এদের মধ্যে দ্বিতীয়টি পত্রের শেষে জানানো হবে। আমার প্রথম অনুরোধ এই যে দয়া করে সরকারের দপ্তরে এই পত্রখানি রেখে দেবেন যাতে আপনাদের পরে আমার দেশবাসিগণের মধ্যে যাঁরা স্থলাভিষিক্ত হবেন তাঁরা এ পত্র পড়তে পারেন।

 আমার প্রতি প্রকাশ্য অবৈধ ও অন্যায় ব্যবহার করা হয়েছে। এই অদ্ভুত ব্যবহারের একটি মাত্র ব্যাখ্যা আমার মনে লেগেছে যে সরকার আমার সঙ্গে স্পষ্টতই কোন দুর্বোধ্য কারণে শত্রুর মত প্রতিহিংসামূলক ব্যবহার করছেন।

 আমার কি বর্তমান অবস্থা নীরবে সহ্য করে যা ঘটে তা গ্রহণ করবার জনে বসে থাকা উচিত— না যা আমার কাছে অসঙ্গত, অন্যায় এবং অবৈধ তাব বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে উঠবো? অনেক পর্যালোচনার পর আমি স্থির করেছি যে এই অবস্থার নিকট আত্মসমর্পনের প্রশ্ন অবান্তর। অন্যায়কে চলতে দেওয়ার থেকে অন্যায়কে মেনে নেওয়া আরও বেশী পাপ। সুতরাং বিদ্রোহ আমি করবোই।

 বর্তমান সময়ে যখন চারিদিকে প্রতিবাদ চলছে তখন সাধারণ পথ শেষ হয়ে গেছে। একটিমাত্র পথ শুধু বাকি—বন্দীব হাতে শেষ অস্ত্র—অনশন!

 বর্তমান অবস্থায় জীবন আমার কাছে দুঃসহ। অন্যায় ও অধর্মের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জীবনের পরমায়ু ক্রয় করে নেওয়া আমার প্রতিটি অণু পরমাণুর বিরুদ্ধে।

৭৭