পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সহযোগিতা এরও আবার মূলে আছে একটি বস্তু যার ভার জগদ্দল পাথরের মত সম অংশে চাপ দিয়ে আছে ভারতে এবং এই দেশে—সে হল শ্বেত বর্বরতা। আমাদেরই মত স্থানীয় ভারতীয়েরা বৃটিশের অত্যাচারে নিপীড়িত নিষ্পেষিত। জাপানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হবার আগে এবং যুদ্ধের প্রথম বৎসরে অকথ্য নির্যাতন এদের সহ্য করতে হয়েছে বৃটিশের হাতে। এখানে খনিজ এবং উদ্ভিজ্জ উৎপাদনের ব্যবসায়ে শ্বেতাঙ্গদের যথেষ্ট স্বার্থ আছে এবং সেইজন্যেই সকলরকম উপায়ে তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে এই দেশকে হাতের মুঠোর মধ্যে বাখতে হয়। তাই ভারতীয়দের একহাতে সমস্ত সম্পদ তুলে দিতে হয় এই বর্বর শাসকদের হাতে আর অন্য হাতে গ্রহণ করতে হয় নির্যাতন ও অত্যাচারের ক্লেশ। এদিকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ এসে পৌছেছে এদের মনে। এদেরও মনে বহুদিনকার ঘুমিয়ে-পড়া আশার সূর্য আবার জেগে উঠছে ধীরে ধীরে। তাই তারা যে সুযোগ বুঝে আজাদ-হিন্দ ফৌজে এসে যোগ দেবে—সহায়তা করবে এতে বিস্ময়ের কিছু নেই।

 তাদের ওপর এই জুলুম এবং তার পরিবর্তে তাদের ক্ষুব্ধ মনের আন্দোলন সম্বন্ধে একটা সুস্পষ্ট ছবি আমরা দেখতে পাবো ১৯৪১ সালের শ্রমিক আন্দোলনে। এ আন্দোলন সম্পূর্ণ অহিংস ভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমিকদের দাবী ছিল— (১) জীবনযাত্রার অতিরিক্ত ব্যয়বৃদ্ধির জন্য চীনাদের সহিত সমান হারের মাহিনা। (২) সংবাদপত্র পড়ার স্বাধীনত। (৩) আমন্ত্রিত ভারতীয় নেতাদের অধীনে সভা আহ্বানের স্বাধীনতা (৪) বাইবের থেকে আত্মীয়বন্ধুদের বাড়ীতে আনবার অধিকাব (৫) সমস্ত তাড়ির দোকানের উচ্ছেদসাধন (৬) উপযুক্ত শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা (৭) এমন সব সংস্থার ব্যবস্থা করা যাতে জগতের লোক জানতে পারে তারাও মানুষ (৮) উচ্চপদে নিয়োগ..... ইত্যাদি।

 বৃটিশ শাসক এর প্রত্যুত্তর দিয়েছিল। ভাষায় নয় কার্যে। যথা — (১) ধর্মঘটীদের ওপর গুলীবর্ষণ (২) নারীদের বলপূর্বক উলঙ্গ করে রাস্তায় রাস্তায় তাড়া

৮৭