বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
১৪৭

পাতাল অভিমুখে অগ্রসর হন। তিনি তথায় উপস্থিত হইলে আহতগণ দারুণ বিপদের মধ্যেও উল্লসিত হইয়া উঠেন।

 নেতাজী সুভাষচন্দ্রের এই মধুর চরিত্রের জন্য আজাদ-হিন্দ ফৌজের প্রত্যেকটি সৈন্যও তাঁহাকে গভীরভাবে ভালবাসিত এবং তাঁহার শিক্ষা সকলে অন্তরের সহিত মানিত ও তাঁহাকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করিত। লেঃ কর্ণেল চাটার্জ্জি তাহার একটি উদাহরণ দিয়াছেন।

 তিনি বলিয়াছেন, “ইম্ফল হইতে ফিরিবার সময় সৈন্যদিগকে অনেক দুঃখ-কষ্ট ভোগ করিতে হইয়াছে। এক জায়গায় একটি লোক মরণোন্মুখ হয়। ভাগ্যক্রমে তাহার ভাই তাহার কাছে আসে। অবস্থা দেখিয়া ভাই কাঁদিতে থাকে। তখন সে যোদ্ধা তাহার ভাইকে বলিল—‘তুমি কর্ত্তব্যহারা হইও না, আমার জন্য কাঁদিতেছ কেন? আমার দুঃখ হয় এইজন্য যে নিজের কর্ত্তব্য সম্পূর্ণরূপে করিতে পারিলাম না! তুমি আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দাও যতদিন বাঁচিবে, ততদিন আমার অসমাপ্ত কার্য্য সম্পন্ন কবিতে চেষ্টা করিবে। নেতাজীকে বলিও— আমি আমার প্রাণ এখানে দিলাম কিন্তু বাসনা রহিয়া গেল—তাহা সম্পন্ন করিতে পারিলাম না!

 সুভাষচন্দ্রের প্রতিভা বহুমুখী, যদিও তাহা কেবল দেশের স্বাধীনতা-লাভের উপায়-উদ্ভাবনেই নিরত ছিল। দেশের শিল্প-বাণিজোর জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘বেঙ্গল স্বদেশী লীগ’ দ্বারা তিনি দেশের অর্থনীতিক উন্নতির বিষয়েও মনোনিবেশ করিয়াছিলেন। দর্শনের ছাত্র হিসাবে জগৎকে নূতন কোন মতবাদ প্রদান করাও হয়ত তাঁহার পক্ষে অসম্ভব হইত না; কিন্তু যে দর্শন-শাস্ত্রের চর্চ্চায় তাঁহার জীবন আরম্ভ, সেই বিষয়ের মধ্যে ডুবিয়া থাকিবার অবকাশ তিনি পান নাই—নতুবা আজ পৃথিবী হয়ত সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল, কাণ্ট, হেগেল,