পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জমীদার-পুত্ৰ গজেন্দ্রনারায়ণ বাবু ছমিরের সমবয়স্ক ছিলেন। ছমিরই উৎসাহ দিয়া বাবুজিকে লাঠিখেলা শিক্ষা দেয়। তাহার পর গজেন্দ্র। নারায়ণ বাবু চব্বিশ বৎসর বয়সের সময় যখন জমীদারীর কৰ্ত্ত হইলেন, তখন ছমির সর্দারই তঁহার দক্ষিণহস্ত হইল। গজেন্দ্রনারায়ণ ছমিরের পরামর্শে অনেক দুঃসাহসিক কাৰ্য্যে পৰ্যন্তও প্ৰবৃত্ত হইতেন এবং কানও কাৰ্য্যে বিফলমনােরথ না হওয়ায় তাহার উৎসাহ ও লোভ ক্রমেই বাড়িয়া যাইতে আরম্ভ করিয়াছিল। দাঙ্গা, হাঙ্গামা, লুট ঢাকাতি, বলপূর্বক পরের জমী দখল, কিছুতেই গজেন্দ্রনারায়ণ বাবু পশ্চাৎপদ হইতেন না। ছমির সর্দার ছায়ার ন্যায় মনিবের পশ্চাৎ পশ্চাৎ পাকিত । জমীদার গজেন্দ্ৰনারায়ণ ছমিরকে কতবার বিবাহ করিবার জন্য উৎসাহিত করিয়াছিলেন। ছমির শুধুই বলিত “হুজুরের মেহেবুরানীতে । ঐশ্ব আছি। ওসব লেঠার মধ্যে গেলি পরে’, কব্জিাতি আর জোর {াকুবি নে। অমন কামও কি করে ? যে ক'ড দিন আছি, লাঠিধান কোলে করে এই দেউড়ীতেই কাটায়ে দেব।” ছমিরের এই প্রতিজ্ঞা শুনিয়া কেহ আর তাহাকে বিবাহ করিতে অনুরোধ করিত না। কিন্তু তাই বলিয়া ছমির যে একেবারেই হিংস্ৰ পশুর মত ছিল, তাহাও ত মনে হয় না । দাঙ্গা করিতে গিয়া সে কত জনের মাথা ফাটাইয়া দিয়াছে, কত জনের সর্বস্ব, লুণ্ঠন করিয়াছে, কতজনের ঘর স্বালাইয়া দিয়াছে ; তখন তাহাকে দেখিলে একটা প্ৰকাণ্ড দৈত্য বলিয়া বোধ হইত। মাথায় বাবাড়ী চুলের গোছা ফুলিয়া উঠিয়াছে, তাহার উপর একখানি লাল গামছা বাধা, ডান হাতে একখানি রক্ষাকবচ | বাধা, হাঁটুর উপর মালকেঁচা করিয়া কাপড় পর্যা-জবা ফুলের মত । রাঙ্গা বড় বড় দুইটা চক্ষু, প্ৰকাণ্ড একজোড়া গোফ-সে দেহ যেমন ‘ANSXV».