পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭৫
পল্লী-সমাজ


—“রমেশ, রমার সে উগ্রমূর্ত্তি মনে হ’লে এখনো হৃৎকম্প হয়, দাঁতে দাঁত ঘ’ষে বল্‌লে, ‘রমেশের বাপ আমার বাবাকে জেলে দিতে যায় নি? পার্‌লে ছেড়ে দিত বুঝি?” মেয়েমানুষের এত দর্প আর সহ্য হল না রমেশ। আমিও রেগে ব’লে ফেললাম, “আচ্ছা ফিরে আসুক সে, তার পরে এর বিচার হবে!” এতক্ষণ পর্য্যন্ত রমেশ বেণীর কথাগুলা মনের মধ্যে ঠিকমত গ্রহণ করিতে পারিতেছিল না। কবে তাহার পিতা রমার পিতাকে জেলে দিবার আয়োজন করিয়াছিলেন, তাহা সে জানে না, কিন্ত ঠিক এই কথাটিই সে দেশে পা-দিয়াই রমার মাসীর মুখে শুনিয়াছিল, তাহা তাহার মনে পড়িল। তখন পরের ঘটনা শুনিবার জন্য সে উৎকর্ণ হইয়া উঠিল। বেণী তাহা লক্ষ্য করিয়া কহিল,—“খুন করা তার অভ্যাস আছে ত! আকবর লেঠেলকে পাঠিয়েছিল, মনে নেই? কিন্তু, তোমার কাছে ত চালাকি খাটেনি,—বরঞ্চ তুমিই উলটে শিখিয়ে দিয়েছিলে। কিন্তু, আমাকে দেখ্‌চ ত? এই ক্ষীণজীবী—” বলিয়া বেণী একটুখানি চিন্তা করিয়া লইয়া, তুষ্টু কলুর ছেলের কল্পিত বিবরণ নিজের অন্ধকার অন্তরের ভিতর হইতে বাহির করিয়া, আপনার ভাষা দিয়া একটু একটু গ্রথিত করিয়া বিবৃত করিল। রমেশ রুদ্ধনিশ্বাসে কহিল,—“তার পর?” বেণী মলিনমুখে একটুখানি হাসিয়া কহিল,—“তার পরে কি আর মনে আছে ভাই! কে, কিসে ক’রে যে আমাকে হাঁসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, সেখানে কি হ’ল, কে