পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণার চুড়ী

 কি করিব? চিঠি লিখিব, না গহনা ফিরাইয়া দিব?—এতগুলা গহনা!

 অমলার মাথা ঘুরিতে লাগিল; সে আর ভাবিতে পারিল না। হঠাৎ সিঁড়িতে পায়ের শব্দ হইল। অমলার মুখ মড়ার মত শাদা হইয়া গেল। এ পদশব্দ তাহার স্বামীর!

 অমলা হুম্‌ড়ি খাইয়া বাক্সের উপরে পড়িল। তাড়াতাড়ি ডালা বন্ধ করিয়া বাক্সটা আপনার কোলের ভিতর টানিয়া নিয়া, তাহার উপরে আঁচল চাপা দিল।

 রাজেন্দ্র, একেবারে ঘরের ভিতর ঢুকিল। তাহার মুখ আজ প্রসন্ন।

 অমলা তাহার দিকে পিছন ফিরিয়া বসিয়াছিল। রাজেন্দ্র অমলার প্রতি চাহিয়া আপনমনে মৃদুহাস্য করিল। তারপর ‘আল্‌নার সুমুখে দাড়াইয়া আপিসের জামাকাপড় খুলিতে লাগিল।

 জামাকাপড় ছাড়িয়া রাজেন্দ্র আস্তে-আস্তে অমলার পাশে গিয়া বসিল।

 অমলার বুক দুরু-দুরু করিতে লাগিল। তাহার প্রাণ যেন কণ্ঠের কাছে উঠিয়া আসিল।

 স্ত্রীর মুখের দিকে কৌতুকপূর্ণ দৃষ্টিতে চাহিয়া রাজেন্দ্র কহিল, “ইস্, আর কতদিনে এ দুর্জ্জয় মান ভাঙ্গ্‌বে গো?”

 অমলা মাটির দিকে চাহিয়া রহিল। রাজেন্দ্র যে হঠাৎ কেন তাহার সহিত সাধিয়া কথা কহিতে আসিল, সেটা সে আদোপেই বুঝিতে পারিল না।

১৪৭