বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

তাঁদের মুখবন্ধ! শ্বশুরকে তাঁরা পিতা বলেন, অথচ মুখে ঘোমটা! এ যে কি রকম লজ্জা, আমি ত তা বুঝতেই পারি না।”

 বরেন্দ্রনাথ বলিলেন, “এ ভাবটা এখন ঢের কমে এসেচে।”

 সুখেন্দু কহিল, “হ্যাঁ, সে কথা ঠিক; কিন্তু কমান’ হয়েচে বলে সমাজপতিদের মুখও যথেষ্ট রক্তবর্ণ হয়ে উঠেচে!”

 এইরূপ কথা হইতে হইতে দু’জনে অনেকখানি পথ অগ্রসর হইয়া পড়িলেন। বরেন্দ্রনাথ কিছু তফাতে একখানা বাড়ী দেখাইয়া দিয়া বলিলেন, “আর এসে পড়েচি,—ঐ আমার বাংলো।”

 সুখেন্দু কহিল, ‘‘জায়গাটি বেশ নিরিবিলি ত?”

 বরেন্দ্রনাথ বলিলেন, “হ্যাঁ, নিরিবিলি দেখেই ত এখানে বাংলো তৈরি করিয়েচি। কল্‌কাতায় সারা বছর লোকের গোলমালে আর গাড়ী-ঘোড়ার ঘড়্‌ঘড়ানিতে কাণ ঝালাফালা হয়ে ওঠে, মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ি একটু -শান্তি পাবার জন্যে। তা এখানে এসেও যদি সেই হৈ-চৈ সইতে হয়, তা’হলে সহর ছেড়ে আর এখানে আস্‌বার দরকার কি? ওদিকে নয়,— আমাদের ঢোকবার পথ এই দিকে।”

 মেদিপাতার বেড়ার মাঝখানে একটি ছোট্ট গেট্। গেটের পরেই লাল কাঁকর ছড়ান একটি সরু পথ। পথের দু’ধারে ক্রোটনের সারি, তারপরে যত্ন-কর্ত্তিত দূর্ধ্বায় ভরা দুইখণ্ড সমতল ভূমি। ভূমির ঠিক মধ্যস্থলে দুটি মর্ম্মররচিত বিবসনা রমণীমূর্ত্তি সলজ্জ ভঙ্গীতে নতদৃষ্টিতে যেন আপনাদের বসনমুক্ত অঙ্গ নিরীক্ষণ করিতেছে! চারিদিকে কত ফুলের গাছ! গাছে গাছে কত ফুল!—কোনটি রক্তরাঙ্গা, কোনটি ফিকে লাল, কোনটি গাঢ় নীল, কোনটি ধব্‌ধবে সাদা, আবার কোনটি বা

২৪