পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
পুনশ্চ

মাঠে ঘাটে হাটে বাটে জলে স্থলে তার স্বরাজ,
হঠাৎ দেহটাকে ঘিরলে চার দেয়ালে,
মনটাকে আটা দিয়ে এঁটে দিলে
পুঁথির পাতার গায়ে।

আমিও ছিলেম একদিন ছেলেমানুষ।
আমার জন্যেও বিধাতা রেখেছিলেন গড়ে
অকর্ম্মণ্যের অপ্রয়োজনের জল স্থল আকাশ।
তবু ছেলেদের সেই মস্ত বড়ো জগতে
মিলল না আমার জায়গা।
আমার বাসা অনেক কালের পুরোনো বাড়ির
কোণের ঘরে;
বাইরে যাওয়া মানা।
সেখানে চাকর পান সাজে, দেয়ালে মোছে হাত,
গুন্ গুন্ করে গায় মধুকানের গান।
শান-বাঁধানো মেজে, খড়খড়ে দেওয়া জানলা।
নীচে ঘাট-বাঁধানো পুকুর, পাঁচিল ঘেঁষে নারকেল গাছ।
জটাধারী বুড়ো বট মোটা মোটা শিকড়ে
আঁকড়ে ধরেচে পূব ধারটা।
সকাল থেকে নাইতে আসে পাড়ার লোকে,
বিকেলের পড়ন্ত রোদে ঝিকিমিকি জলে
ভেসে বেড়ায় পাতিহাঁসগুলো,
পাখা সাফ করে ঠোঁট দিয়ে মেজে।

প্রহরের পর কাটে প্রহর।
আকাশে ওড়ে চিল,