বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আন্ধা বন্ধু
২০১

নীরব রইল্যা সুন্দর কন্যা দুই আঁখি ঝরে।
অনেক দিনের ভোলা বাঁশী আজ ডাকিছে আমারে॥
ছোড কালের বাঁশীরে বড় কালে বাজিল।
পুষ্পবনে বস্যা বন্ধু বাঁশী শুনাইল॥
বনের বাঁশী নয়ত ইহা মনের বাঁশী হয়।
ছোট কালের যতেক কথা জাগাইয়া তোলয়রে॥
বাঁশী মন-গহনে বাজে....।
এই বাঁশী শুনিয়া ফুটত কুসুমের কলি।
বন্ধু মোরে শিখাইত মিঠা মিঠা বুলিরে॥
বাঁশী......।
বাঁশী আমার জীবন যৈবন বাঁশী ছিল প্রাণ।
বাঁশী রবে মন-যমুনা বহিত উজানরে॥
বাঁশী......।
এক জন্নম গেছে মোর আর জন্নম হয়।
জন্মে জন্মে তোমার দাসী হইয়াছি নিশ্চয়॥
বাঁশী......।

ভুলিতে না পারি বন্ধু কেবলি অভাগা।
তোমার বাঁশী দিল বন্ধু বুকে বড় দাগা॥
কি করিব রাজ্য ধনে কুল আর মানে।
সরম ভরম ছাড়লাম বন্ধু তোমার বাঁশী গানে॥
ভুলি নাই ভুলি নাই বন্ধু তোমার চান্দ মুখ।
বনে গিয়া দেখাইব ছিঁড়িয়া সে বুক॥
ভুলি নাই ভুলি নাই বন্ধু তোমার বাঁশীর ধ্বনি।
পরতে পরতে বুকে আক্যা আছ তুমি॥
কি করিব রাজ-ভোগে সুখ সবিস্তরে।
বনের পাখী ভইরা রাখছে সোণার পিঞ্জরে॥
উড়ি উড়ি করি বন্ধু ছিলাম এতকালে।
বিষ নাই যে খাই বন্ধু তোমায় ফিইর‍্যা পাইব বইলে॥