পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজা তিলক বসন্ত
৩৯৫

না ভাঙ্গিলে শূন্য ভাণ্ড শতগুণ ভালা।
তোমারে ছাড়িয়া ঘরে না রইব একেলা॥
আমারে এড়িয়া যদি নিঠুর হইয়া যাও।
লোহার কাটারি ঘরে গলে দিয়া যাও॥”

এইমত রাজকন্যা কান্দিতে লাগিল।
বুঝাইয়া অন্ধ মালী কহিতে লাগিল॥
“হরিণের মাংসু কন্যা অনেকদিন না খাই।
হরিণ শীকারে যাব মানা কর নাই॥”
কন্যা বুলে “শুন পতি শুন দিয়া মন।
সাতভাই মারিয়া যত আনিব হরিণ॥
মাগিয়া চাহিয়া মাংস আনিয়া দিবাম তোমারে।
তবুত পরাণ পতি না যাও বনান্তরে॥”
বুঝাইলে পরবোধ নাহি মানে অন্ধ রায়।
ভাবিয়া চিন্তিয়া কন্যা বাপের আগে যায়।

“শুন শুন বাপ আগো কহি যে তোমারে।
অন্ধ না জামাই তোমার যাইব শীকারে॥
অন্ধ জামাই তোমার কইয়া দিল মোরে।
শব্দবাদী বাণ আর ধনু দেও তাহারে॥”

কন্যারে দেখিয়া রাজা কান্দিতে লাগিল।
এত সোহাগের ঝি গো এতো দুঃখ ছিল॥

রাজা দিলাইন শব্দভেদী ধনু আর ছিলা।
এরে লইয়া অন্ধ রাজা পন্থ বাহিরিলা॥
আগে আগে চলে বাদ্য মহা রোল করি।
বাদ্য শুন্যা চলে রাজা জঙ্গলার মাঝে॥
হাতড়াইয়া বিতড়াইয়া রাজা ক্ষণে উঠে পড়ে।
কতদিনে দাখিল হইল ঘুঙ্ঘবনের মাঝে॥ (১—৯০)