প্রবন্ধ এবং (৩) দশকাহনিয়া, সেরপুর, সরিসাবাড়ি, সিরাজগঞ্জ প্রভৃতি স্থান নিবাসী ইনাতুল্লা ফকির, নিমাই মুদী, গোলাম হুসেন প্রভৃতি কতিপয় কৃষকের নিকট হইতে ছড়াগুলি ও প্রবাদ কথাটির অনেকাংশ সংগ্রহ করিয়াছি। রামগোপালপুরের জমিদার শ্রীযুক্ত সৌরেন্দ্রকিশোর রায়-চৌধুরী প্রণীত ময়মনসিংহের বারীন্দ্র জমিদার নামক গ্রন্থেও এই প্রবাদ-কথার কোনও অংশের উল্লেখ আছে। এই শ্রীকৃষ্ণ চৌধুরীই নাকি এই জমিদার বংশের আদিপুরুষ। ছড়াগুলির তেমন বিশেষত্ব নাই। প্রবাদ-ঘটনাটির ঐতিহাসিক মূল্য কতখানি তাহাও জানিবার উপায় নাই। তবে প্রবাদগুলি কদাচ উপেক্ষনীয় নহে। যাহা লোকমুখে চলিয়া আসিতেছে তাহা আংশিক সত্য হইলেও ইতিহাসের উপেক্ষনীয় নহে। অনেক সময় প্রকৃত ইতিহাস বলিয়া আমরা যাহা গ্রহণ করিয়া থাকি, দেখা যায়, তাহাও মূল-শুন্য প্রবাদের ভিত্তির উপর লিখিত। তাহা যদি সত্য হয় তবে বর্ত্তমানে সংগৃহীত এই প্রবাদ ও ছড়ার হয়ত-বা একটা কিছু ঐতিহাসিক মূল্য থাকিতেও পারে। তবে শ্রীকৃষ্ণ চৌধুরী ও সোণারায় যে ঐতিহাসিক ব্যক্তি তাহা বলাই বাহুল্য।”
এই গানটিতে বাঙ্গালা প্রাচীন ছড়ার যে বৈশিষ্ট্য তাহা খুব বহুল পরিমাণে পাওয়া যায়। কোন কোন ছত্রের বারবার পুনরুক্তি—এইটাই আমাদের পাড়াগাঁয়ের ছড়া-পাঁচালীর একটি চিরপরিচিত ধারা। ইহা চণ্ডীদাসের কবিতায়ও প্রচুর দেখা যায়, যথা:—
(১) কহিবে বঁধুরে সখি কহিবে বঁধুরে।
গমন বিরোধী হ’ল পাপ শশধরে॥
(২) একথা কহিবে সখি একথা কহিবে।
অবলা এতেক তপ করিয়াছে কবে॥
(৩) কি মোহিনী জান বঁধু কি মোহিনী জান।
অবলার প্রাণ নিতে নাহি তোমা হেন॥
(8) তোমারে বুঝাই বঁধু তোমারে বুঝাই।
ডাকিয়া শুধায় মোরে হেন জন নাই॥ ইত্যাদি।