পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩e হইয়া উঠিল । কিন্তু তখনি সহাস্যমুথে বলিল, “ন মা, কয়েকদিন থেকে আর তাদের বাড়ী পাইনে ৷” “রণে ভঙ্গ দিলি নাকি ?—পেরে উঠলিনে তাদের সঙ্গে ?” বলিয়া তারাসুন্দরী হাসিতে লাগিলেন। সুরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “যতদিন সত্যি-সত্যি রণ চলেছিল ততদিন ভঙ্গ দিইনি ; কিন্তু অবশেষে অবস্থাটা এমন হ’য়ে দাড়াল ধে ভঙ্গ না দিয়ে আর পারা গেল না ।" পুত্রের কথায় কৌতুহলক্রিস্থ ইষ্টর তারাহন্দী জিজ্ঞাসা করিলেন, "তবে সে-দিন আবার মাধবীকে দিয়ে স্বমিত্রাকে চরকা পাঠিয়ে দিলি যে ?” “স্থমিত্র একটা চবৃক চেয়েছিল তাই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।” বিস্মিত হইয়া তারামন্দরী জিজ্ঞাস করিলেন, “স্থমিত্রা নিজে থেকে চেয়েছিল ?” একটু ইতস্ততঃ করিয়া সুরেশ্বর বলিল, “হ্যা, নিজেই চেয়েছিল ।” ইহাতে তারাসুন্দরীর কৌতুহল বুদ্ধি পাইল ; তিনি বলিলেন, “তার পর চবুকার গতি কি দাঁড়াল ? কোন কাজে আসছে ? না, অকেজো আস্বারের দলে পড়ে শুধু সাজানই আছে?" স্বরেশ্বর স্মিতমুখে বলিল, “তা’ত বলতে পারিনে ম৷ ৷ তবে আমার বিশ্বাস একেবারে অকেজো হ’য়ে পড়ে নেই ।” o স্বরেশ্বরের এ-বিশ্বাস বস্তুতঃ যে ভুল ছিল না, দিন পনের পরে তাহার প্রমাণ পাওয়া গেল। সে-দিন সন্ধ্যার পর গুহে ফিরিয়া সুরেশ্বর দেখিল তাঁহাদের বৈঠকৃথানীয় বিমানবিহারী একাকী বসিয়া অপেক্ষা করিতেছে । ইহাতে অবশ্য বিস্ময়ের কিছুই ছিল না, কিন্তু দুষ্ট চারিট মামুলী কথাবাৰ্ত্তার পর বিমানবিহারী যখন একট। কাগজে-মোড়। বাণ্ডিল ও একথানা থামে-মোড় চিঠি সুরেশ্বরের হস্তে দিয়া বলিল ‘সুমিত্র তোমাকে পাঠিয়েছে? তখন সুরেশ্বর সত্য-সত্যই বিস্মিত হইল। বাণ্ডিলট একটু টিপিয়া দেখিয়া বুঝিতে না পারিয়া সে বলিল, “কি আছে এতে p" * - বিমানবিহারী স্মিতমুখে বলিল, “আমার কৰ্ম্মফল ! প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড কবে, কোথায়, কি করেছিলাম তা জানি নে, কিন্তু কঁাপে ক’রে সজ্ঞানে তার ফল ব’যে বেড়াচ্ছি ।” বিমানবিং রীর সহিত আর কোনও কথা না কহিয়া সুরেশ্বর খাম ছিড়িয়া চিঠি-খান খুলিল এবং সেই দুই ছত্রের চিঠি পড়িতে পড়িতে অপরিসীম সন্তোষে এবং আনন্দে তাহার চক্ষু উজ্জল হইয়া উঠিল। তৎপরে বাণ্ডিলটা খুলিয়া তন্মধ্যস্থ সামগ্ৰী অবলোকন করিয় তাহার আনন্দ দ্বিগুণ বিস্ময়ে রূপান্তরিত হইয় গেল । সুমিত্রা তাহার স্বঙ্গস্ত প্রস্থত স্থত ঘাহা কয়েকদিনের পরিশ্রমে সে কাটিতে পারিয়াছে, তাহা চপৃকার মূল্য-পরিশোধের হিসাবে স্বরেশ্বরকে পাঠাইয়াছে । সুরেশ্বরের মুখে স্বপ্রকট ভাবের ক্রীড়া লক্ষ্য করিয়া বিমানবিহারী কছিল, “খুব খুলী হচ্ছ সুরেশ্বর ?” প্রফুল্পমূপে সুরেশ্বর বলিল, “ত হচ্ছি বই কি ? "মনে হচ্ছে স্বরাজ খানিকট এগিয়ে এল ?” স্বরেশ্বর তেমনি স্মিতমুখে বলিল, “হঁ্য, তা-ও মনে হচ্ছে ।" বিমানবিহারী ক্ষণকাল নিঃশব্দে সুরেশ্বরের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া বলিল, “আচ্ছা, আর এ-রকম ক’টা খন্দরের স্থতোর বাণ্ডিল তৈরী হ’লে একেবারে স্বরাজ লাভ হয় তার হিসাব দিতে পার ?” বিমানবিহারীর কথা শুনিয়া একমুহূৰ্ত্ত চিন্তা করিয়া সুরেশ্বর বলিল, “পারি। আর একটা বাণ্ডিল হ’লেই হয়, যদি সেট। যথেষ্ট বড় হয় !" বলিয়া হাসিতে লাগিল । সুরেশ্বরের বিদ্রুপে ঈষৎ অপ্রতিভ ষ্টইয়া বিমান কহিল, "ত যেন হ’ল ; কিন্তু সেই যথেষ্ট বড় বাণ্ডিলটি অবলীলাক্রমে ভৰ্ম্মে পরিণত করতে অপর পক্ষের কতটুকু বারুদ খরচ করবার দরকার হয় তার হিসাব জান কি ?” মুরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “ন, সে হিসাব আমি জানিনে, তোমার হয়ত জানা আছে ; না জানা থাকে ত এই ছোট বাণ্ডিলটাই নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পার, এটুকু ভস্ম করতে কতটুকু বারুদের দরকার হয়। তার পর সেই যথেষ্ট বড় বাণ্ডিলের অতুপাত অঙ্ক কষে’ বার করে ।” পকেট হইতে দেশলাইয়ের বাক্স বাহির করিয়া একটা